শেখ মাহাবুব আলম বিভাগীয় প্রধান খুলনা
বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে সাংসদ সদস্য আনোয়ারুল বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। শিলাস্তির ডাকেই বরানগর থেকে নিউটাউনের অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে যান আনোয়ারুল। সেখানেই তাঁকে খুন করা হয়।
‘হানিট্র্যাপ’-এর ফাঁদে পা দিয়েই কি নিউটাউনের ফ্ল্যাটে এসেছিলেন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম? খুনের তদন্তে বাংলাদেশের পুলিশের হাতে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে শিলাস্তি রহমান নামে এর মহিলার সামনে এসেছে। যাঁকে ইতিমধ্যে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।
কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে তিনি বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। শিলাস্তির ডাকেই বরানগর থেকে নিউটাউনের অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে যান আনোয়ারুল। সেখানেই তাঁকে খুন করা হয়। জানা গিয়েছে, আবাসনের ফ্ল্যাটি ভাড়া নেওয়ার হয়েছিল সাংসদকে খুন করার জন্য। সেখানে শিলাস্তি সাংসদ আসার আগে থেকে থাকতে শুরু করেন। সাংসদকে খুন করার পর এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহর সঙ্গে ১৫ মে শিলাস্তি বাংলাদেশে ফিরে যান। তার পরই তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিনের বান্ধবী শিলাস্তি।
পুলিশের কাছে নিউটাউনের আবাসনের যে সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে গাড়ি থেকে নেমে তিন জন আবাসনে প্রবেশ করছে। তাঁদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং একজন মহিলা। পরে যখন তাঁরা বেরিয়ে আসেন তখন একজন মহিলা ও পুরুষকে গাড়িতে উঠতে দেখা যায়। পুলিশের অনুমান ওই মহিলাই শিলাস্তি। পুলিশ মনে করছে, সাংসদকে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে আনতে শিলাস্তিকেই ‘ফাঁদ’ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই ফ্ল্যাটে বসেই খুনের পরিকল্পনা করা হয়। তারপর বান্ধবীকে রেখে বাংলাদেশে ফিরে যান আক্তারুজ্জামান শাহিন। ঢাকার তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, ৩০ এপ্রিল ‘সুপারি কিলার’ আমানুল্লাকে নিয়ে কলকাতা আসেন শাহিন। নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে বসেই খুনের পরিকল্পনা হয়। তার পর ১০ মে বাংলাদেশ ফিরে যান শাহিন।
আনোয়ারুলকে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে শাহিনের বকেয়া টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেন আমানুল্লাহ এবং তাঁর সহযোগিরা। এর পর পরস্পরের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় সাংসদকে। শাহিনের নির্দেশেই লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে দুটি পৃথক ট্রলিতে ঢোকানো হয়। তার বাজার থেকে আনা ব্লিচিং পাওডার দিয়ে ঘর পরিষ্কার করে ফেলা হয়।
একটি ট্রলি ব্যাগ তুলে দেওয়া হয় সিয়াম নামে এক বাংলাদেশির হাতে। তাকে ইতিমধ্যেই সিআইডি আটক করেছে। ব্যাগটি কোথায় রেখেছে সে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। অন্য ব্যাগটি থাকে ফ্ল্যাটে। সেটি আমানুল্লার সহযোগী মোস্তাফিজ, ফয়সাল হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারাও খুনের সময় ঘটনাস্থলে ছিল। এরা প্রত্যেকেই আনোয়ারুলের পরিচিত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। বাংলাদেশ পুলিশের কাছে সব স্বীকার করেছে আমানুল্লাহ, শিলাস্তি।
সুত্রঃ হিন্দুস্তান টাইম বাংলা