ঈমানের ভিত্তিতে একজন মানুষ মুসলিম হিসেবে গণ্য হন। হাদিসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়েছে। উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম আ.-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, স্বভাবজাত কাজ ১০ টি। গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, হাত ও পায়ের আঙুলের গিরাগুলো ধোয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম মুণ্ডানো, এস্তেনজা করা এবং কুলি করা।’ (মিশকাত: পৃ.৪৪)
হাদিসে গোঁফ খাটো রাখার এবং দাড়ি লম্বা রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো—গোঁফ খাটো করো এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস, ৯৪৭)
স্বভাবজাত পরিচ্ছন্নতার তাগিদে মানুষ নিজের চুল, নখ, অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করেন এবং এগুলো কেটে থাকেন। তবে কাটার পর এগুলোকে যত্রতত্র ফেলে দেওয়া উচিত নয়।
হজরত মিল বিনতে মিশরাহ আল আশআরি থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা মিশরাহ (যিনি রাসূল সা.-এর সাহাবি ছিলেন)-কে দেখেছেন যে তিনি নখ কাটার পর তা দাফন করে ফেলতেন। তিনি বলতেন, তিনি রাসূল সা.-কে এমন করতে দেখেছেন। (আত তারিখুল কুবরা (ইমাম বুখারি), ৮/৪৫)
ইমাম আহমদ রহ.-কে এক ব্যক্তি কর্তিত চুল ও নখের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এগুলো কি দাফন করব নাকি ফেলে দেব?’ তিনি বলেন, ‘দাফন করে ফেলো।’ লোকটি বলল, ‘আপনি এ ব্যাপারে কিছু পেয়েছেন?’ তিনি বলেন, ‘ইবনে ওমর রা. এগুলো দাফন করে ফেলতেন।’ (আল মুগনি, ইবনে কুদামা : ১/১১০)
তা ছাড়া এসব জিনিস দাফন না করলে এগুলোর অপব্যবহারও হতে পারে। কিংবা এগুলোর মাধ্যমে রোগ-জীবাণুও ছড়াতে পারে। যেমন কোনো ব্যক্তি যদি তার কেটে ফেলা চুল সঠিকভাবে দাফন না করে, তাহলে তা বাতাসে উড়ে খাবারে বা পানিতে মিশে যেতে পারে। ফলে তার সঙ্গে লেগে থাকা জীবাণু পেটে গিয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।