জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি বিষয়ক কর্মশালা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রচলিত পেশার অনেকগুলো গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে।
জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি-২০২২ বিষয়ে এক অবহিতকরণ কর্মশালা আজ বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এই কর্মশালার আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মুখ্য আলোচক ছিলেন এনএসডিএ’র সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ জোহর আলী।
মুখ্য আলোচক তাঁর বক্তৃতায় বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রচলিত পেশার অনেকগুলো গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে। আবার নতুন নতুন অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তরুণ জনগোষ্ঠীকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন সময়ের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। দক্ষতা প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে গেলে অদক্ষ মানুষের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বেতন পাওয়ার সুযোগ থাকে। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ নিলে কর্মসংস্থান ব্যাংক হতে জামানতবিহীন ঋণ পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালের সুবিধা ভোগ করছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট হলো কোন দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যা অর্থাৎ ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী জনসংখ্যার অধিক্য। যখন এই কর্মক্ষম জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বেশি থাকে, তখন ঐদেশ জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালে অবস্থান করছে বলে ধরা হয়। ইউএনডিপি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে দেশে কর্মক্ষম জনশক্তি ১০ কোটি ৫৬ লাখ যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা হবে ১২ কোটি ৯৮ লাখ, আর ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা হবে ১৩ কোটি ৬০ লাখ। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ গঠন করা সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৮ এর ধারা ৬(১)(ক) অনুযায়ী জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি-২০২২ প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে চাহিদাভিত্তিক, গুণগত মানসম্পন্ন, কার্যকর ও ফলাফলকেন্দ্রিক দক্ষতা প্রশিক্ষণ নিশ্চিতা করা এবং দক্ষতা প্রশিক্ষণে সাথে শিল্পখাতের সংযোগ প্রতিষ্ঠা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের জন্য আর্থিক সংস্থানের ব্যবস্থা করার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ বিষয়ে গবেষণা, জরিপ, দূরদর্শী প্রশিক্ষণ নীতি ও বাস্তবায়ন কৌশল বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কুমার মন্ডলের সঞ্চালনায় কর্মশালায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার দপ্তরের উপপরিচালক মোঃ ইউসুপ আলী, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সবিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) এসএম আল বেরুনী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মীর আলিফ রেজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) আতিকুল ইসলাম ও এনএসডিএ’র উপপরিচালক আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামানসহ সরকারি কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন।