দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিমের অভিযানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর খাবারে চরম অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে । এ ঘটনার সাথে জড়িত হাসপাতালের এক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের রান্নাঘরে এ অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সাময়িক বরখাস্ত কর্মচারীর নাম হাবিবুর রহমান। দুদকের খুলনা উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ জনান, রোগীদের জন্য খাবারে যে মূরগীর মাংস রান্না করা হয় সেগুলো দরপত্রের দেয়া পরিমানের চারভাগের একভাগ সাইজ। নিন্মমানের চাল, ডাল দেয়া হয় বলে প্রমান পান আভিযানিক দল। এসব অনিম ও অসঙ্গতির বিষয় হাসপাতালের পরিচালকে জনান।
পরিচালক ডাঃ মহসীন আলী ফরাজি খাবারের দ্বায়িত্বে থাকা স্টুয়ার্ট হাবিবুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ঘটনা তদন্তে উপ-পরিচালককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানান। হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সাথে যোগ সাজস্যে রোগীদের খাবার সরবরাহ কারী ৪ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা দীর্ঘদিন এ অনিয়ম ও দূর্নীতি করছে বলে জানাগেছে। খাবারের চার্ট টানানো থাকলেও মেনুর কোন পরিমান লিখা নেই। চার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম কে ট্রেডার্স মালিক মহানগর যুবলীগ নেতা শেখ শাহাজালাল সুজন,মেসার্স আলহাজ্ব এন্ড সন্স মালিক মৃত,ওয়ার্ডমাস্টার আতিয়ার রহমান,বর্তমান তার পুত্র মোঃ হৃদয়, আল মাসুদ এন্ড ট্রেডিং, মালিক আল মাসুম এবং মজমল বাহরাইন।
হাসপাতালের রোগীদের নিন্মমানের, পরিমানে অতি সামান্য, দিনে ৩-৪’শ জনের খাবার না দিয়ে বিগত দেড় যুগে বিপুল পরিমান অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছে বলে অভিয়োগ ঠিকাদার ও হাসপাতালের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। তবে রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা জানায় হাসপাতালের কর্মকর্তারাই যখন তদন্ত কমিটির সদস্য হয় তখন সঠিক তদন্তের বিষয়ে আপত্তি ও সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা ।
অপরদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিতর্কিত আউটসোর্সিং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে গোপন বৈঠক করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিস ও কন্ট্রাক্ট ক্লিনিং সার্ভিসের কিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগ, বেতন না দিয়ে চাকুরী থেকে বাদ দেওয়া, শ্রম অধিকার লংঘন সহ একাধিক অভিযোগে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকা ভুক্ত করার হয়েছে জানিয়ে ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ, মোঃ মুহসীন আলী ফরাজী।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে গাজী টিভিতে প্রতিবেদন প্রচারের পরেও হাসপাতাল কতৃপক্ষ ঠিকাদারের সাথে আতাত করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কর্মচারীরা। আজ সকালে হাসপাতালের গেটে কড়া পুলিশী প্রহরায় পরিচালক ডাঃ, মোঃ মুহসীন আলী ফরাজী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ইসলাম সরদার, হাসপাতালের এডি ডাঃ মিজানুর রহমান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইখতিয়ার হোসেন, হিসাব কর্মকর্তা আম্বিকা রানীসহ গোপন বৈঠক করেছেন। যা হাশপাতালের অনাহারের অর্ধাহারে থাকা বেতন না পাওয়া আউটসোর্সিং কর্মীদের মনে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
অপরদিকরে কেন এমন গোপন বৈঠক জানতে চাইলে সহকারী পরিচালক পুলিশী প্রহরায় ঠিকাদারের লোকদের হাসপাতাল ত্যাগ করান। পরিচালক কথা বলতে ইচ্ছুক নয় বলে চলে যান। প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচালকের দোহাই দিয়ে দ্রুত সরে পড়েন।বিষয়টি জনমনে ব্যাপক সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।