শামীম আখতার (নিজস্ব প্রতিবেদক)
দীর্ঘ ৪০ বছর ফাইল বন্দি থাকায় আলোর মুখ দেখেনি কেশবপুরের বিসিক নগরীর প্রকল্প। শুধু তাই নয়! দুইশত বিঘা সরকারি জমিতে ইকোনমিক জোন প্রকল্পের ফাইলও বন্দি হয়ে আছে। তবে, এখানকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, কৃষকদের উন্নয়ন এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের প্রতি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জোরালো দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে তৎকালীন সরকার দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উৎপাদিত পণ্যের সুষম ব্যবহার করার জন্য কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে তোলার লক্ষে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে কেশবপুর শহর সংলগ্ন শিল্প এলাকা গঠনের জন্য শতাধিক ব্যাবসায়ীর নিকট থেকে কুপনের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিলো। অথচ অজ্ঞাত কারণে সেই প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে সারা দেশে ১’শত ইকোনমিক জন প্রকল্পের জন্য কেশবপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামে দুইশত বিঘা সরকারি জমি থাকার পরেও সেও প্রকল্পের ফাইল লাল ফিতাই বন্দি।
বিসিক নগরী ও ইকোনমিক জোন প্রকল্পের বিষয়ে কেশবপুর পৌরশহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী রুহুল কুদ্দুস বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা। এই তিন জেলার ত্রি-মোহনায় উত্তম যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকায় কেশবপুরে বিসিক নগরী গড়ে তোলা হলে এখানে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এছাড়াও কেশবপুরের সাথে রাজধানী ঢাকা, ভোমরা, বেনাপোল ও মংলা পোর্ট এর উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকায় কৃষি শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি এবং উৎপন্ন পণ্য সারাদেশে বিপণনের মধ্যে দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
কেশবপুর বণিক সোসাইটি’র সভাপতি মতিয়ার রহমান জোরালো দাবি নিয়ে বলেন, কেশবপুর উপজেলায় মৎস্য ও কৃষি শিল্প গড়ে তোলার উপযুক্ত পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে এখানে বিসিক শিল্প অঞ্চল গড়ে উঠলে বেকার সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পেয়ে উপকৃত হবে। তিনি আরও বলেন, ২০০৭ সালে সারাদেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে কেশবপুর উপজেলার গৌরিঘোনা ইউনিয়নের আগোরহাটি মৌজায় নদী সংলগ্ন ২’শত বিঘা সরকারি জমিতে সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করা হলেও পরবর্তীতে সেটা রাজনৈতিক কারণে থেমে যায়। সরকারি জমি স্থানীয় অনেকেই জবরদখল করে রেখেছে, এমনকি জমি অধিগ্রহণ কাজেও বাধাগ্রস্ত করেছে। যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষকদের উন্নয়ন এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের প্রতি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিসিক যশোরের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, যশোর-নড়াইল মহাসড়কের হামিদপুরস্থ বিসিক শিল্প নগরীকে পরিত্যক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন করে যশোর খুলনা মহাসড়কের রাজারহাটস্থ রামনগরে বিসিক শিল্প নগরী গড়ে তোলার কাজ চলমান রয়েছে। কেশবপুরে বিসিক প্রকল্পের বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি অল্প কিছুদিন যশোরে কর্মরত আছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরে জানানো হবে।
এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, আমি এই উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরে বলতে পারবো।