দেশীয় জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ লুটে নিচ্ছে ভারতীয় জেলেরা। কোন রকম সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমায় ঢুকে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ লুটে নিচ্ছে ভারত ও মিয়ানমার জেলেরা। শুক্রবার মধ্য রাতে এম বি অভিজিৎ নামের ২টি ও এমবি নারায়ন নামের একটি মোট ৩টি ফিশিং ট্রলারসহ ৪৮ জন জেলেকে আটক করে নৌবাহিনী ও মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন সদস্যরা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতীয় জেলেরা দাবি করেছেন, পথ ভুলে বা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু ভারতীয় মাছ ধরার ফিশিং ট্রলার বাংলাদেশে ঢুকে পরার এমন ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, মা ইলিশ রক্ষাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রজনন নিশ্চিতে ২২ দিনের মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকায় বঙ্গপোসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করছিল ভারতীয় জেলেরা। এমন অপরাধে ভারতীয় পতাকাবাহী ৩টি ফিশিং ট্রলারসহ ৪৮ জেলেকে আটক করেছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। আটক জেলেরা সবাই ভারতীয় নাগরিক বলে জানা গেছে। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মধ্য রাতে আটককৃত জেলেদের থানায় হস্তান্তর করেন নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।
তিনি আরও বলেন, গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ নিয়মিত প্যাট্রলিং চলাকালে জাহাজের রাডারে সন্দেহজনক ফিশিং ট্রলারের উপস্থিতি লক্ষ্য করে তারা। গোপন এমন তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে বিদেশি পতাকাবাহী ট্রলার হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এ সময় বাংলাদেশী প্রশাসনের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জাহাজে থাকা নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা ধাওয়া করে ট্রলার তিনটিকে বাংলাদেশের জলসীমাতেই আটক করতে সক্ষম হয়। বাকি ট্রলার ও জেলে ভারতীয় সিমানায় ঢুকে পরায় তাদের আটক করা সম্ভাব হয়নী।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে আটক ট্রলার ৩টি ভারতীয় পতাকাবাহী ফিশিং ট্রলার মোংলায় নিয়ে আসে। এসময় ২ হাজার ৭শ কেজি ইলিশ সহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। নৌবাহিনীর হাতে আটক ২টি ট্রলারে মোট ৩২ জন ও কোস্টগার্ডের হাতে আটক একটি ট্রলারে ১৬ জন ভাররতীয় জেলে রয়েছে। তারা সবাই ভারতীয় নাগরিক। পরবর্তীতে আটক ট্রলার ৩টি মোংলা নৌঘাটিতে নিয়ে আসা হয় এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ট্রলার ও আটক ভারতীয় জেলেদের মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মোংলা থানার অপিসার ইনচার্জ মো: আনিসুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড ৩টি ট্রলার ও ৪৮ জন জেলেকে মোংলা থানায় হস্তান্তর করে। মামলা দায়ের শেষে শুক্রবার সন্ধায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।