জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত।
আজ (মঙ্গলবার) সকালে খুলনা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ। দিবসটি পালনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘সমাজসেবায় গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে এর কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের পরিধি বৃদ্ধি করেছে। ইতোমধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তর ৫৪টি কর্মসূচির সমন্বয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তাবলয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, সরকার প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ভাতা প্রচলন করেছে। সামাজিক সেবার পরিধি আরো বৃদ্ধি করতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসমূহকে একযোগে কাজ করতে হবে।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার এবং বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক সমীর মল্লিক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক খান মো: মোতাহার হোসেন। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবির, সরদার মাহাবুবার রহমান, রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ, হিরণময় মন্ডলসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন।
জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে ৫জন প্রতিবন্ধীর মাঝে হুইল চেয়ার, সফল ৬টি ঋণগ্রহীতা বেরসকারি/স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট এবং সমাজসেবা দপ্তরের ৯জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন বিভাগীয় কমিশনার।খুলনা জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজনে।
পরে বিভাগীয় কমিশনার খুলনা জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স চত্বরে দুই দিনব্যাপী মেলা উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। মেলা সকাল ১১টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে। এর আগে বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে রেলওয়ে স্টেশন থেকে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর ৫৪টির বেশি সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। খুলনা জেলায় এক লাখ ১০ হাজার ৬১৮ জন বয়স্কভাতা পেয়ে থাকেন। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতার আওতায় ৪৭ হাজার ৮৭৩ জন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে ৪৩ হাজার ১৪৮ জন ভাতা পেয়ে থাকেন।
বিশেষ ভাতা হিসেবে হিজড়া ৩৫জন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ভাতা এক হাজার ৫০২জন, বেদে শিক্ষা উপবৃত্তি ৩৯জন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি ৫৬৯ জন, ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে এক হাজার ৫৮৭ জনকে সাত কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য একশত ২৭ জনকে নয় লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।