৫ বছর পর “বাবা-মায়ের বিয়ে খেল সন্তান”
মোঃ মিরাজ হোসাইন ফরিদপুর
ভালোবেসে প্রিয়তমাকে পালিয়ে বিয়ে করেন মো. এনায়েত হোসাইন (৩০)। কিন্তু, সেই বিয়েতে এনায়েতের পরিবারের কোন দ্বিমত না থাকলেও মেনে নেয়নি শ্বশুর বাড়ির পরিবার। এর মাঝে মেয়ের পরিবার এনায়েতের নামে একটা মামলাও ঠুকে দেন। পরে এ মামলায় ২০২২ সালে ২৫ দিন জেলও খাটতে হয় তাকে। পরে জামিন পান সে।
এভাবে চলতে থাকে দীর্ঘ পাঁচ বছর। এর আগে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর প্রেমিকাকে বিয়ে করার একবছর পর কোলজুড়ে আসে সন্তান মো. সামি (০৪)
এনায়েত ফরিদপুরের সালথার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মোতালেব মাতুব্বরের ছেলে। কনের বাড়িও একই গ্রামে। কনে খাদিজা আক্তার সেতু গ্রামটির কুদ্দুস মাতুব্বরের মেয়ে।
এভাবে চলার পাঁচ বছর পর স্থানীয় চেয়ারম্যানের মধ্যস্ততায় সমাধান হয় শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে। অবশেষে ধুমধাম করে আয়োজন করা বিয়ের অনুষ্ঠানের। অতঃপর ৪ বছরের সন্তান মো. সামি মাতুব্বরকে সঙ্গে নিয়ে বরযাত্রী যান এনায়েত। বাবা আর সন্তানের সাজও ছিল এক। সঙ্গে ছিল ১৬৩ জন বরযাত্রী।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারী) সকাললে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শহিদুল হাসান খান সোহাগ।
চেয়ারম্যান সোহাগ বলেন, ২০১৮ সালে ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন এনায়েত হোসাইন। কিন্তু, বিয়ের পরে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এ বিয়ে মেনে নেয়নি। এভাবে কেটে যায় পাঁচটি বছর। মামলাও হয় ছেলেসহ পরিবারটির নামে। ছেলে জেলও খাটেন। অবশেষে আমার মধ্যস্ততায় বিষয়টি সমাধান হয়। পরে ওই বিয়ে মেনে নেন মেয়ের পরিবার। অবশেষে মহাধুমধামে গত বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারী) বরযাত্রী দাওয়াত করে মেয়েকে স্বামীর হাতে তুলে দেন। এ বরযাত্রীতে ছিল ছেলে পক্ষের ১৬৩ জন বরযাত্রী।
এ ব্যাপারে বর মো. এনায়েতের হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আসলে অনেক কষ্টের পরে আমাদের বিয়ে মেনে নেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। অনেক কষ্ট ও সাধনায় আমাদের ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় অনেক আনন্দিত আমি।
এনায়েত বলেন, “আমার ইচ্ছে ছিল মানুষকে এটা প্রমাণ করে দেখাবো ভালোবাসার জয় একটা সময় হয়। সেটার প্রমাণ দেখাতে পেরে আমি আজ সত্যিই গর্বিত।”