আজ ২৫ মার্চ ২০২৪ সোমবার সকাল ১০:০৫ ঘটিকায় খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন, খুলনার আয়োজনে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন এর সভাপতিত্বে সভাটি আয়োজিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভার শুরুতে পুলিশ কমিশনার মহোদয় উপস্থিত সকলকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বক্তব্যের শুরুতে বলেন, “বাঙালি জাতিকে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮ এর আইযুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬২ এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান এবং ৭০ এর জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমিকভাবে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ এবং জনযুদ্ধের দীক্ষা দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের উত্তাল দিনে রেসকোর্স ময়দান যেটি বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী জাতীয় উদ্যান সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমে বঙ্গবন্ধু বাংলার ও বাঙালির স্বাধীনতার কালজয়ী অমর কাব্য উপস্থাপন করেছিলেন। এই স্বাধীনতার অমর কাব্যের ১৮ মিনিটের ঐতিহাসিক ভাষণে ছিল পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী কর্তৃক বাঙালি জাতিকে ২৪ বছর ধরে শোষণ, নির্যাতন এবং বঞ্চনার ইতিহাস। রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে পরোক্ষভাবে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে কি কি করতে হবে তার সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা ও রুপরেখা বাতলে দিয়েছিলেন। দেশবাসীকে স্বাধীন সার্বভৌম হতে হলে কি কি করতে হবে তার সকল সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা ছিল তাঁর বক্তব্যে। এই বাঙালি জাতিকে যে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না এই কথাটি বিশ্ববাসীকে সর্বপ্রথম জানিয়ে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী নির্মম হত্যা যজ্ঞ চালায়। সেই সময় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে দেশ প্রেমিক পুলিশ সদস্যরা সর্বপ্রথম হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে ৩০ লক্ষ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ০২ লক্ষ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল এই স্বাধীন সার্বভৌম দেশের পতাকা।”
উক্ত আলোচনা সভায় খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশনস্) মোঃ হাসানুজ্জামান, পিপিএম; খুলনা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, পিপিএম (বার); খুলনা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক মোঃ আলমগীর কবির এবং খুলনা জেলা মুক্তিযুদ্ধ সংসদের সাবেক কমান্ডার সরদার মাহাবুবার রহমান-খুলনাস্থ বিভিন্ন পর্যায়ের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।