1. admin@naragatirsangbad.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় তদন্ত কমিশন গঠন খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত রূপসায় পানের বরজে বিষাক্তদ্রব্য প্রয়োগে ক্ষতি প্রায় ৫০ লাখ টাকা খুলনার তালিকভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী রকি গ্রেফতার আন্ত:জেলা নারী পাচারকারী চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনা অভিযানে হত্যা মামলার আসামিসহ মাদক ও চাঁদাবাজ চক্রের ২৬ জন আটক বাগেরহাট বায়তুল লতিফ মাষ্টার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইসলামিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০২৪ অনুষ্ঠিত প্রেসক্লাব রামপাল’ সাংগঠনিক সভা পাইকগাছায় জামায়াতের ইসলামীর আমীরে ডাঃ শফিকুর রহমানের আগমন উপলক্ষে র‍্যালি ও পথসভা। দুমকী উপজেলায়, তাবলীগ জামাতের ওলামা মাশায়েখরা, সাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রধান। 

র‍্যাব-৭ এর বিশেষ অভিযানে দালাল ও সিন্ডিকেটের ৩৮ জন আটক

নড়াগাতীর সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪
  • ৭৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

 

 

ইদানিং পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে দালালদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে মর্মে র‌্যাবের নিকট কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গৃহীত হয়। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০ মার্চ সকাল ০৯০০ ঘটিকা হতে ১৩০০ ঘটিকা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় র‌্যাব-৭, চটগ্রাম কর্তৃক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মোট ৩৮ জন দালালকে হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় উপস্থিত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক আটককৃত ৩৮ জনের মধ্যে ১৪ জনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং বাকি ২৪ জনকে ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করেন৷ তারা মূলত গ্রামের দরিদ্র, অসহায়, যারা সরকারী চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে অনবিজ্ঞ এমন ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে এবং সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার অপ্রতুলতার কথা বর্ণনা সাপেক্ষে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে এক ধরণের ভীতি সৃষ্টি করে বিভিন্নভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

 

পেশাদার দালালচক্রঃ জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল এলাকায় গড়ে ওঠা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মালিকপক্ষ এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, সিএনজি অটোরিক্সা এবং ইজিবাইক চালকদের নিয়ে দালাল চক্র তৈরি করে থাকে। প্রায় প্রতিটি সরকারি হাসপাতালেই দালালচক্রের প্রভাব লক্ষণীয়। দালালরা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কথা বর্ণনা দিয়ে সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসার প্রতি রোগীদের আস্থার সংকট তৈরি করে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। এছাড়াও চিকিৎসকরা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলে সেগুলো দ্রুত করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এবং কমিশন পাওয়ার আশায় বিভিন্ন কৌশলে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে যাচ্ছে।

 

শয্যা ও ওয়ার্ড সিন্ডিকেটঃ প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আগত সাধারণ রোগীরা ভর্তি হওয়ার পর তারা বিভিন্ন পদে পদে বাধাগ্রস্থ হয়। প্রথমেই জরুরী মুহূর্তে রোগীকে রোগী বহনের ট্রলি থেকে শুরু করে শয্যা/ওয়ার্ড পাইয়ে দেয়ার কথা বলে দালালরা একটা নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে।

 

দুরারোগ্য রোগের ভীতি সঞ্চারঃ তারা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রোগী আগমন করা মাত্রই রোগীর মধ্যে একটা ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে ভোক্তভোগী রোগীকে তার প্রকৃত রোগের কথা বাড়িয়ে তাকে মরণ ব্যাধি ক্যান্সার বা টিউমার বা অন্য কোন বড় ধরণের রোগের কথা বলে বেসরকারি কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় এবং সেখানে ভর্তি করায়। ফলে রোগীরা সরকারি হাসপাতালের বিনামূল্যের চিকিৎসা ও স্বল্পমূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। এতে অধিক অর্থ ব্যয় করে রোগী ও তার স্বজনরা সর্বশান্ত হয়ে বাড়ী ফেরে। দালালদের প্রলোভনে পরে মানহীন হাসপাতালে যাওয়ায় অনেক সময় সু-চিকিৎসার অভাবে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে।

 

এ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটঃ হাসপাতালে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও তার অপ্রতুলতার গুজব ছড়িয়ে সিন্ডিকেটকারীরা দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা করে দিবে মর্মে ব্যক্তিমালিকানাধীন অ্যাম্বুলেন্স অধিক টাকায় ভাড়া দেয়। এমনকি চিকিৎসাধীন কোন রোগী এক হাসপাতাল হতে অন্য হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করার প্রাক্কালে এবং কোন রোগী মৃত্যুবরণ করলেও হাসপাতাল থেকে তার লাশ বহনেও সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই দালালচক্রের বিরুদ্ধে।

 

পরীক্ষা-নিরীক্ষা সিন্ডিকেটঃ হাসপাতালের চিকিৎসক কর্তৃক রোগীদের রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলে সেগুলো দ্রুত করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এবং কমিশন পাওয়ার আশায় বিভিন্ন কৌশলে দালালরা তাদের চুক্তিভিত্তিক বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে যায়।

 

কমিশন বাণিজ্যঃ একজন রোগী হাসপাতালে আগমনের পর ভর্তি থেকে শুরু করে রোগী বহনের জন্য ট্রলি, শয্যা/ওয়ার্ড পাইয়ে দেয়া, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরিদর্শন পিছন থেকে সামনে নেয়া, স্বল্পমূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেয়া, তাৎক্ষণিক এ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা, স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের ঔষধ ক্রয়সহ সকল ক্ষেত্রে রোগীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কমিশন বাণিজ্য করে আসছে।

 

পথ্য বাণিজ্য সিন্ডিকেটঃ সরকারী হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে রোগীদের বিনামূল্যে সরকার কর্তৃক সরবরাহকৃত ঔষধ নেয়া থেকে পথভ্রষ্ঠ করে স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের ঔষধ ক্রয় করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কমিশনপ্রাপ্ত নির্দিষ্ট ফার্মেসীতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ফার্মেসী কর্তৃক ঔষধের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ঔষধের স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে বিক্রয় করে থাকে।

 

আটককৃত দালালদের ভাষ্যমতে জানা যায়, সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক কর্তৃক রোগীর ব্যবস্থাপত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখে দেওয়ার পর তারা রোগীদের স্বল্পখরচে উক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। উল্লেখ থাকে যে, একজন রোগী নিয়ে আসতে পারলে দালালরা ২০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং পরিস্থিতি ভেদে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন পেয়ে থাকে। দালালরা রোগীদের পথভ্রষ্ঠ করে তাদের সুবিধামত কথিত ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় দালালরা তত বেশি কমিশন পায়।

 

উল্লেখ্য, মানুষ অসুস্থ্যতা থেকে মুক্তি পেতে সরকারি হাসপাতালে স্বল্প/বিনামূল্যে সুচিকিৎসার প্রত্যাশা নিয়ে এসে থাকে। পক্ষান্তরে সরকার কর্তৃক হাসপাতাল গুলোতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে। দেশের সরকারী হাসপাতাল কেন্দ্রীক দালালচক্রের অসৎ সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ মানুষ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিনামূল্যে কাঙ্খিত চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো দালালমুক্ত করার জন্য সর্বসাধারণের সচেতনতা একান্ত প্রয়োজন, পাশাপাশি হাসপাতালগুলো দালালমুক্ত করার জন্য র‌্যাবের এই বিশেষ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

Facebook Comments Box

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ নড়াগাতীর সংবাদ।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park