হারুন শেখ বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি।
বাগেরহাটের রামপালে কথিত ভূমিহীনের হামলায় প্রকৃত ভূমিহীন নারীসহ ১৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রামপাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আহতরা হলেন উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ওমর ফারুক (৩৫), নজরুল পাটোয়ারি (৬৫), রিপন শেখ (৩২), মতলেব শেখ (২২), সোহেল শেখ (২২), আহমদ আলী ((২২), শরীফা বেগম (৩০), মনিরা বেগম (২৫), মতিরুল ইসলাম (৫৫), খাদিজা বেগম (২৪), নিলুফা বেগম (২৪), রিক্তা বেগম (৩০), সুমাইয়া বেগম (২০), জেসমিন বেগম (৪৫), রিজিয়া বেগম (৫০), জাহাঙ্গীর মোড়ল (৪০)। এদের রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের প্রায় ৮৩ জন ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা গোবিন্দপুর মৌজার চরভরাটি জমি সরকারিভাবে বন্দোবস্ত পান। সরকারিভাবে ১৯৯৪/৯৫ সালে প্রত্যেক ভূমিহীন পরিবারকে ৪৪ শতাংশ করে জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের সাবেক বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ ফকিরের হস্তক্ষেপে ৮৩ জন ভূমিহীন জমি থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
গত জুলাই-আগষ্টের বিপ্লবের পরে প্রকৃত ভূমিহীনেরা তাদের বন্দোবস্তকৃত জমি ফিরে পাওয়ার জন্যে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও যৌথবাহিনীর নিকট ্আবেদন করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফতাব আহমেদ সরোজমিনে গিয়ে মাপজোক করে লাল নিশান টানিয়ে দেন এবং চিহ্নিত দাগের জমি ভূমিহীনদের বুঝিয়ে দেন। ভূমিহীন পরিবারের সদস্যারা তাদের জমিতে গেলে কথিত ভূমিহীনরা বাঁধা দেয়। ওই ভূমিদস্যুরা জমি দখল রেখে উল্টো বিএনপি নেতা আলী আকবার সম্রাট ও জামায়াত নেতা বাদশাহ শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়।
আহত ভূমিহীন মতিরুল ও রিপন শেখ জানান, ৩০ বছর পূর্বে আমরা সরকারিভাবে ৪৪ শতাংশ করে চরভরাটি জমি প্রকৃত ভূমিহীন হিসেবে বন্দোবস্ত পাই। ওই দখল নিতে গেলে প্রভাবশালী বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ ফকির বাঁধা দেয়। পরে গত ৫ আগষ্টের পর আমরা জমিতে যাওয়ার জন্যে প্রশাসনের স্মরনাপন্ন হই। তারা আমাদের জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে দেন। আমরা গত বৃহস্পতিবার বিকালে জমিতে গেলে গেলে আমাদের উপর হামলা করে। তেলিখালী গ্রামের মাইকে ডেকে লোকজন জড়ো করে তারা আমাদের মা বোনদের উপর হামলা করলে আমরা আহত হই। তেলীখালী গ্রামের ভূমিদস্যু শিফার শেখ, শেখ হাসান, আলামিন, ফিরোজা বেগমসহ প্রায় দুই শতাধিক গ্রামবাসী হামলায় অংশ নেয়। আমরা তখন নিরুপায় হয়ে ফয়লা পুলিশ ফাড়ি ও সেনা কর্মকর্তাগণকে অবহিত করাসহ লিখিত অভিযোগ করি। সম্রাট ভাই ও বাদশা ভাই আমাদের জমি উদ্ধারে সহযোগীতা করায় তারা তাদের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ করছে, যা মোটেও সত্যি নয়।
অভিযুক্ত শিফার শেখ, শেখ হাসান, আলামিন জানান, আমরাও ভূমিহীন। আমাদের কোন জমি নেই। আমরা দীর্ঘ দিন ওই জমিতে ঘর করে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করি। আমরা তাদের উপর হামলা করিনি।
এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি মো. সেলিম রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিয়েছি। স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ মিমাংশার ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।