মায়ের লাশ কবরে রেখে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মেয়ে ববিতা খাতুন। বগুড়ার ধুনটে ঘটেছে বেদনা বিধুর এ ঘটনাটি। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১১০ নম্বর কক্ষে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা দেয়ার সময় সহপাঠিদের সাথে বসে বার বার চোখ মুছছিলো আর খাতায় লিখছিল ববিতা। সে বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সাতটিকরি গ্রামের দলিলুর রহমানের মেয়ে। তার মা শাহেলা খাতুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল বুধবার সকালের দিকে মৃত্যুবরণ করেন। সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
পরীক্ষার আগে মেয়েকে নিজ হাতে তৈরি করে দেবেন মা। এরপর ভালোবাসা ও দোয়া দিয়ে পরীক্ষার হলে পাঠাবেন। এটাই ছিল স্বাভাবিক চিত্র। কিন্তু ববিতার ভাগ্যে তা আর হয়নি। তাকে রেখে চিরদিনের চলে গেলেন। মাকে কবরে রেখে কেন্দ্রে আসতে হয় তাকে। ববিতা গোপালনগর ইউএকে উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী। সংবাদ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মীর্জা ওমর ফারুক খোঁজ-খবর নিতে পরীক্ষা কক্ষে যান। তিনি শোকাহত ববিতার পাশে দাঁড়িয়ে শান্তনা দেন। এসময় ববিতার কক্ষের অনেক শিক্ষার্থীর চোখেই পানি চলে আসে। ববিতা ভালোভাবে পরীক্ষা দেয়া ও বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেন কেন্দ্র সচিব।
ববিতা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, তার মা তাকে অনেক ভালোবাসতেন। মা চাইতেন যেন সে পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। তাই মায়ের কথা ভেবেই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সে। কেন্দ্র সচিব ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তফিজ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান এসএসসি পরীক্ষার্থী ববিতার মা হারানোর বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। তার কক্ষের পর্যবেক্ষকসহ আমি কেন্দ্রে তার খোঁজ খবর রেখেছি। সান্তনা দিয়েছি। পরীক্ষার খাতায় মোটামুটি সব প্রশ্নের উত্তর লিখেছে ববিতা।