ভারতে পালানোর সময় জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তের পুটিয়া এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি জানায়, এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কোমরকড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন আহম্মদ মজুমদারের ছেলে। তিনি ঢাকার বাসাবো থানার সবুজবাগের দক্ষিণগাঁও এলাকায় থাকতেন। তিনি জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর অধীন যুগ্ম সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কসবা উপজেলা সীমান্তের পুটিয়া এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) আওতাধীন কসবা সালদা নদীর বিওপির টহল দল বিষয়টি জানতে পারে। বিজিবির সদস্যরা আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখা সীমান্ত পিলার ২০৫০/৮ থেকে ৫০ গজ বাংলাদেশের ভেতর থেকে তাঁকে আটক করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে জাকারিয়া মজুমদার জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা ছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য কসবা সীমান্তে যান।
সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বারের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাসপোর্ট ছাড়া অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে তাঁকে কসবা থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় দালাল চক্রের সদস্য মো. খায়রুল বাসার ও ভারতীয় দালাল চক্রের সদস্য মো. নাদিম মিয়ার সহযোগিতায় ভারতে পালানোর জন্য এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার কসবা সীমান্ত আসেন।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে ওই কর্মকর্তাকে আটকের বিষয়টি জানতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের কাছে এ–সংক্রান্ত কোনো কাগজ আসেনি। আটক ব্যক্তিকে এখনো থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেনি বিজিবি।’
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংসদ সচিবালয়ে আত্তীকরণ হওয়া ১২ কর্মকর্তাকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। তাঁদের মধ্যে এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারও আছেন। ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো আইনের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ আছে।