বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবিতে আয়নাঘর ছিল এমন তথ্য জানিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছিলেন বিজিবি থেকে বরখাস্তকৃত সিপাহী শাহীন। তবে এমন কোন ঘর ছিল না বলে দাবি করেছে বিজিবি সদর দফতর। বরখাস্তকৃত সিপাহী শাহীনের বিরুদ্ধে বিজিবির শৃঙ্খলা ও মর্যাদার সম্পূর্ণ পরিপন্থী গুরুতর অপরাধের প্রমাণ রয়েছে।
আজ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিজিবির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এমন দাবি করা হয়। বিজিবির দাবি, পিলখানায় আয়নাঘরের কোনো অস্তিত্ব নেই। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন অভিযোগ করেছেন শাহীন। তিনি বিজিবিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।
বিজিবি’র ভাষ্য অনুযায়ী, গুম হওয়ার বিষয়ে সিপাহী শাহীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত। বিভাগীয় তদন্ত কার্যক্রম চলাকালীন পুরোটা সময় তিনি রামগড় বিজিবি ব্যাটালিয়নের কোয়ার্টার গার্ডে অবস্থান করেছিলেন এবং ব্যাটালিয়নের সকল সদস্যদের চোখের সামনেই ছিলেন। বাহিনীর সদস্য হিসেবে তিনি নিয়মিত বেতনও নিয়েছেন। সেখানে তিনি প্রায়ই পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যাটালিয়ন ক্যান্টিনের মোবাইলে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। পিলখানায় অবাস্তব আয়নাঘরের অভিযোগ এনে তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশপ্রেমিক বিজিবিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন। বিচার চলাকালীন সময়ে তাকে কখনোই বিজিবি সদর দফতর, পিলখানায় আনা হয়নি।
বিজিবিতে সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে যথাযথ বিজিবি আইন ও তদন্তের মাধ্যমে বিচারকার্য সম্পন্ন করা হয়। সিপাহী শাহিনের বিরুদ্ধেও একই প্রক্রিয়ায় বিচার সম্পন্ন হয়েছে। যথাযথ তদন্ত কার্যক্রম ও বর্ডার গার্ড আদালতের মাধ্যমে তার বিচারকার্য সম্পন্ন করা হয়েছে। বিজিবি’র বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও আইনগত। কিছু অদৃশ্য মহল, সীমান্তে টানটান উত্তেজনা চলাকালীন এই ক্রান্তিলগ্নে বিজিবি’র মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন যা বিজিবি’র ভাবমূর্তি ও শক্তিকে খর্ব করার হীন অপচেষ্টা মাত্র।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, বিজিবি দেশের সীমান্ত ও আইন-শৃঙ্খলা সুরক্ষায় আপসহীন। আমাদের বাহিনী অত্যন্ত সুশৃংখল, দায়িত্বশীল এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যেকোন অপরাধী বা দুর্নীতিবাজ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিজিবি নিজেদের প্রতিষ্ঠিত নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে,শাহীন একজন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক হওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ও স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া ২০২২ সালের ৩০ জুন জনৈকা সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে উম্মে তাসনিম ও খাদিজা নামে আরও দুজন নারীকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে সম্পর্ক স্থাপন করেন; যা শাস্তিযোগ্য অনৈতিক কর্মকাণ্ড।