বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়ন কালিয়া উপজেলা শাখার আয়োজনে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নেতৃবৃন্দরা তাদের বিভিন্ন দাবির কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা বাংলাদেশের গ্রাম শহরের নিম্নবিত্ত কৃষক, খেতমজুর, মাটিকাটা, ইটভাটা, ঝুড়ি চাটাই বোনা, চায়ের দোকানদার, ছোট দোকানদার, দর্জি শ্রমিক, মিষ্টি বিক্রেতা, দধি মিস্টি তৈরি করা কারিগর, ঘর মিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, পাইপ মিস্ত্রি, খোয়া বানানো মিস্ত্রি, রাজ, রং, সহ সকল প্রকার তার টানা মিস্ত্রি, ভ্যান, রিক্সা, নসিমন, করিমন, আলম সাধু, ভটবটি, বাস, ট্রাকের হেলপার (অস্থায়ী ভিত্তিতে), বালি তোলা, গ্যারেজ শ্রমিক, স-মিল শ্রমিক, রেন্ট এ কার, জুতা শ্রমিক, মৎস্য ঘের, ও প্রাণী খামার শ্রমিক, পরিচ্ছন্ন কর্মী, ধোপা, জেলে তাতি কামার কুমোর, আদিবাসী নরসুন্দর, চাতাল শ্রমিক, হকার, গৃহস্থলীতে কর্মরত নারী, বোড়ে বানানো ও পাট বাছা নারী শ্রমিক, ফল ও সবজি বিক্রেতা অল্প বেতনে চাকুরী করা শ্রমিক, সহ সকল গতর ঘাটা মানুষ আমরাই হচ্ছি ১৫ আনা।
আমাদের শ্রমে ঘামে উৎপাদনে আমরাদেরকে সহ এই জাতিকে খাওয়াইয়ে পরাইয়ে বাঁচায়ে রাখি। আমাদের সন্তানরা বিদেশে তাচ্ছিল্য অপমান সহ্য করে চাকরি করে রেমিটেন্স এনে দেশের ভীত সোজা করে, আমাদের ঘরের মেয়েরা গার্মেন্টসে শ্রম দিয়ে পোশাক উৎপাদন করে রপ্তানির মাধ্যমে রেমিটেন্স এনে এই দেশকে সচল রাখে ।
শুধু তাই নয় আমাদের এই নিচু তলার মানুষের শ্রমে ঘামের উৎপাদনের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ, ভ্যাট ট্যাক্স এর মাধ্যমে এই রাষ্ট্রকে প্রদান করায় এই রাষ্ট্র ও সচল থাকে । তারপরেও আমাদের এই জনগোষ্ঠীর উপর অত্যাচার নির্যাতন জুলুম বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে । বিভিন্ন সময় আমাদের এই ১৫ আনা মানুষকে শতভাগে বিভক্ত রেখে ঠকানো হচ্ছে। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় এবং গ্রামে ১৫ আনা মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াকু শক্তি তৈরি করা ছাড়া আমাদের বাঁচার কোন উপায় নেই। তাই আমরা আমাদের ঐই দাবির ভিত্তিতে ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নিতে পারি।
১- দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থামাও, সকল প্রকার সিন্ডিকেট ভেঙে দাও। ২- কৃষক খেতমজুর সহ সকল শ্রমজীবী মানুষকে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা, ও মাসিক ৫০০০ টাকা জমাবিহিন পেনশন দিতে হবে। ৩- মাসিক ২৫ হাজার টাকার নিচে আয়ক্ষম মানুষকে পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে। ৪- কৃষকের ঘরে থাকা কৃষি পণ্যের মূল্য কৃষক পায়না, ওই একই পণ্য কৃষকের ঘর শূন্য হলে দ্বিগুণ মূল্যে কিনতে হয়, এই কারণে কালিয়া উপজেলায় কৃষি বাজার তৈরি করতে হবে। ৫- দাঙ্গাবাজি জুলুমবাজি হত্যা গুম ঘুমের রাজনীতি বন্ধ করার জন্য দাঙ্গা বাঁধার পূর্বেই পুলিশি হস্তক্ষেপ করতে হবে।৬- দুর্নীতি লুটপাট মাদক বন্ধ করতে হবে। ৭- বারোইপাড়া ব্রিজ, মহাজন ব্রিজ, সহ সকল রাস্তাঘাটের উন্নয়নের দাবিতে জোরালো আন্দোলন করতে হবে। ৮- কালিয়া ও লোহাগড়া উপজেলা ভেঙ্গে তিনটি উপজেলা নির্মাণ করতে হবে। ৯- কালিয়া উপজেলায় বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তুলতে হবে। ১০- কালিয়া উপজেলায় বিশ্ববিদ্যালয় সমমানের মহাবিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। ১১- কালিয়ার মানুষের জীবন বাঁচাতে অত্যাধুনিক হাসপাতালে এখনই প্রয়োজন। ১২- শিক্ষা কাজের দাবিতে অর্থাৎ বেকার যুবকদের চাকরির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ১৩- শিক্ষক, আইনজীবী, সকল অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবী রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের নিকট থেকে এই ১৫ আনা মানুষের লড়াই সংগ্রাম ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন করার জন্য প্রয়োজনে পরামর্শ নিতে হবে।
আমাদের স্বপ্ন আমাদের অধিকার আদায়ের লড়াই কে বেগবান করবে ।