1. admin@naragatirsangbad.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
লোহাগড়ায় কাঠ বোঝাই অবৈধ লাটা উল্টে পড়ে ১ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। লোহাগড়ায় নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হরিণাকুন্ডু পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯৫ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত।  খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে ঢাকাস্থ ইরানি রাষ্ট্রদূত মনসুর চাভোশির দলিত জনগোষ্ঠীর ঝরেপড়া ১৪০ শিক্ষার্থী পেল শিক্ষা উপকরণ  লোহাগড়ায় সর্বদলীয় নেতা মেম্বার ধলু, যে দল ক্ষমতায় যায় সেই দলই তার  লোহাগড়ায় পুলিশের পৃথক দুটি অভিযানে ইয়াবাসহ পুরুষ ও নারী ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার।  গোপালগঞ্জে জেলা বিএনপির নতুন আরো একটি কার্যালয়ে উদ্ভোধন রামপালে স্বপযাত্রার শিশুদের উদ্ভাবনী উৎসব মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক কমিটি গঠন সভাপতি শহিদুল, সম্পাদক শামীম।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস: ৫৩ বছরে আমাদের অর্জন

নড়াগাতীর সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪
  • ৮৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

 

 

এস এম দেলোয়ার হোসেন

 

স্বাধীনতা…চার অক্ষরের এই ছোট্ট শব্দটি প্রতিটি জাতির কাছেই এক অন্য রকম আবেগ ও ভালোবাসার নাম। “এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা” গানটি রুপক অর্থে লেখা হলেও, আক্ষরিক অর্থেই কোনো দেশের স্বাধীনতা আনতে রক্তের বন্যা বয়ে যায়। মানুষ আসলে জন্মগতভাবে স্বাধীন হলেও প্রায়শই এই স্বাধীনতা হরণ করে নেয় কিছু হানাদার দস্যু।

আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পুরোপুরি বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ। আর এই মহান স্বাধীনতার ঘোষণাটি আসে ২৬ মার্চে। এজন্যই দিনটি বাঙালি জাতির জন্য খুবই বিশেষ এক দিন। এই দিনে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে বিভিন্ন আয়োজন করে থাকি, আর আলোচনা সমালোচনার ফাঁকে নিজেদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে চোখ বুলাই।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, ২৬ মার্চ এর ইতিহাস

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে লিখতে গেলে শুরু করতে হবে সেই ১৯৪৭ থেকেই, যখন ইংরেজরা এই দেশের মাটি ত্যাগ করেছিল। ইংরেজ ঔপনিবেশিক শক্তি চলে যাবার আগে, এই উপমহাদেশকে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুই দেশে বিভক্ত করে যায়। ধর্মভিত্তিক এই বিভাজনে তখন কোনো সমস্যা বোঝা না গেলেও কিছুদিন যেতেই খোলস পাল্টে আসল রূপ ধরা পড়ে যায়। বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের উপর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকভাবে শোষণ চালাতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা।

শুরুটা হয় ১৯৫২-তে মাতৃভাষার ওপর আঘাত দিতে। এতেই থেমে থাকেনি তারা, রীতিমত সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালাতে থাকে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে যখন বাংলার দামাল ছেলেরা রক্ত দিল রাজপথে, তখন থেকেই বলতে গেলে বাঙালিদের মানসপটে অঙ্কিত হয়ে গিয়েছিল যে, স্বাধিকারই আসল মুক্তি। তাছাড়া এই নিপীড়ন চলতেই থাকবে। এরপর একসময় রবীন্দ্র সংস্কৃতি চর্চার ওপর খড়গহস্ত নেমে আসে। এভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাঙালিদের হেনস্তা করতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। সরকারি, সামরিক, বেসামরিক সব খাতেই নজির বিহীন বৈষম্যের শিকার হয় বাঙালিরা। মাঝে একবার বাংলাকে উর্দু হরফে লেখার পর্যন্ত চেষ্টা করেছিল তারা।

এসব কিছুর কারণে বাঙালিরা ভেতরে ভেতরে ফুঁসতে থাকে। ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬৬ এর ৬ দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান তারই ইঙ্গিত দেয়। বাঙালিরা তখন বুঝতে থাকে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন কোনোক্রমেই হস্তান্তর করবে না পাক সামরিক শাসকরা। তাই ’৭০ এর নির্বাচনে জেতার পরও যখন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসতে দেওয়া হলো না, উল্টো আলোচনার নামে টালবাহানা করা হচ্ছিল- বুদ্ধিমান সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন সামনে কী হতে যাচ্ছে । বাঙালি জাতি এগিয়ে যেতে থাকে সেই রক্তক্ষয়ী ২৬ মার্চ এর ইতিহাস -এর দিকে।

৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক বুদ্ধিদীপ্ত কাজ করে বসলেন, যা ইতিহাসের পাতায় বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকবে। আকারে ইঙ্গিতে পুরোটাই বুঝিয়ে দিলেন বাঙালিকে এবার স্বাধীনতার সংগ্রামই করতে হবে।

এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম!

কিন্তু পাকিস্তানিরা যখন শান্তির পথ বেছে নিল না, ২৫ মার্চে টিক্কা খান, জেনারেল রাও ফরমান আলী খান, জেনারেল নিয়াজি এদের মাস্টারপ্ল্যানে সরাসরি বাঙালিকে হত্যার মহোৎসবে মেতে উঠলো, সেই রাতেই বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হবার পূর্বে বেতারের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করলেন। এরপর চট্টগ্রাম বেতারে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান দ্বিতীয়বার বঙ্গবন্ধুর হয়ে ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এবং ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এরপর শুরু হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ।

স্বাধীনতার ঘোষণা

বঙ্গবন্ধুকে ২৫ মার্চ দিবাগত রাতেই তাঁর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের আগেই তিনি বেতার মারফত ঐতিহাসিক এই ঘোষণাটি দিয়ে যান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঘোষণাটি ছিলো, :

এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।

২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করা হয় কখন ও কত সালে?

স্বাধীনতা দিবস কবে থেকে কার্যকর করা হয়েছে তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরপরই এর উদ্যোগ নেয়া হয়। একদম সঠিক করে বললে, ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি একটি বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করে ২৬ মার্চকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করা হয়, এবং ২৬ মার্চ এর ইতিহাসকে স্মরণ করার জন্য দিনটিকে সরকারিভাবে ছুটির দিন বলে ঘোষণা করা হয়।

২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস কেন পালন করা হয়?

৩০ লক্ষ শহীদের জীবন আর ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতা দিবস কেন পালন করা হয়, সেটির উৎস অনুসন্ধান করতে হলে আগে জানতে হবে কেন আমরা এতো রক্ত ঝরিয়ে স্বাধীনতা আনলাম? স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা বলার আগে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে এই ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য কী ছিলো?

স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জন ও অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণমুখী, মানবিক, প্রগতিশীল স্বতন্ত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।

মানুষের মৌলিক অধিকার ও ন্যায়সংগত অধিকার নিশ্চিত হবে এমন একটি দেশ প্রতিষ্ঠা করাও এর উদ্দেশ্য, যেখানে জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা, শোষণ, বৈষম্য, অন্যায়ের অবসান ঘটিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুখী-সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে- এমন স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করার উদ্দেশ্যও একই আছে। প্রতি বছর আমরা এই দিনটিতে নিজেদের দিকে ফিরে তাকাই, বীরদের স্মরণ করি, তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি আর বাংলাদেশকে তার লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে নিতে দৃপ্ত শপথ নেই ।

Facebook Comments Box

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ নড়াগাতীর সংবাদ।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park