সাংবাদিক এ কে হিরু কর্মজীবনে ছিলেন নির্ভীক ও সমাজসেবী। দূর্নীতি কখনো স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি পেশাগত জীবন ও সমাজকর্মী হিসেবে বিতর্কের উর্দ্ধে ছিলেন। মানুষটি ছিলেন প্রচার বিমুখ। রাজনীতির ভাষায় যাকে বলে পর্দার অন্তরালের মানুষ। আবু নাসের হাসপাতালে রোগে-শোকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। রোগ যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসা নিতে তার পরিবারকে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। সঞ্চয়ী ছিলেন না কখনো। এই নগরীতে তার মাথা গোঁজার ঠাইটুকুও নেই। তার উত্তারাধিকার বলে নেই কেউ । এই ত্যাগী মানুষটি বেঁচে থাকবেন তার সৃজনশীল সৃষ্টিতে সমাজ উপর্কত হতো। তার নিঃস্বার্থ শ্রমদান আজকের প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। এ ত্যাগী মানুষটির চির বিদায়ে সমাজ ক্ষতিগ্রস্থ হলো। তার কর্ম আমাদের কাছে আজ অম্লান হয়ে থাকবে। এভাবে বললেন গুনীজন স্মৃতি পরিষদের স্মরণ সভায় বক্তারা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ, ২০২৪) সকাল ১১ টায় বিএমএ মিলনায়তনে গুণীজন স্মৃতি পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত বীরমুক্তিযোদ্ধা, প্রথিতযশা সাংবাদিক এ কে হিরুর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গুণীজন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি এ্যাড: শামীমা সুলতানা শীলু। এ কে হিরুর কর্মময় জীবন নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু।
প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন বিএমএ এর সভাপতি ডা: শেখ বাহারুল আলম, গুণীজন স্মৃতি পরিষদের উপদেষ্টা শ্যামল সিংহ রায়, এ কে হিরুর পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শেখ আহসান হাবীব টিপু, সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম, এনটিভির ব্যুরো প্রধান সাংবাদিক মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি মফিদুল ইসলাম, দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, গবেষক মীর মো: কবির হোসেন, আয়কর আইনজীবীর সাবেক সভাপতি এস এম শাহনওয়াজ আলী, ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন হাওলাদার, ডা: সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু , সরদার আবু তাহের, পরিবর্তন খুলনার পরিচালক নাজমুল হক ডেভিড, শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, সাংবাদিক ওয়াহেদ -উজ-জামান বুলু, সাংবাদিক সুনীল দাস , সাংবাদিক রাশিদুল ইসলাম, এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান বাবুল আকতার, কবি সৈয়দ আলী হাকিম, টিআইবি এর মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিধান চন্দ্র রায়,নূরুন নাহার হিরা, সাংবাদিক তাহমিনা আক্তার শিপন, সাংবাদিক দেবব্রত রায় দেবু ,সাংবাদিক শিপলু, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম, প্রবাহের পিংকী জাহানারা, নারী উদ্যোক্তা মুক্তা জামান রাখী, কৃষ্ণা দাশ, ছাত্রনেতা জয় বৈদ্য, দুর্জয় হালদার, গুণীজন স্মৃতি পরিষদের সহ- সাধারণ সম্পাদক রিপন বিশ্বাস প্রমুখ।
সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন। সভায় বক্তারা বলেন, সাংবাদিক এ কে হিরু তৎকালীন দৈনিক রূপালীতে খুলনার সংকট সমস্যা নিয়ে ধারাবাহিতভাবে ৬২টি প্রতিবেদন লিপিবদ্ধ করেন। বলা চলে ঐসময় এটি ছিল রেকর্ড। পেশাগত জীবনের বিভিন্ন স্তরে খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
সাংবাদিকদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধন, সংবাদপত্রের জন্য জাতীয় নীতিমালা, সংবিধানের ৩৯ধারা মোতাবেক সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, সাংবাদিকদের বেতন বোর্ড রোয়েদাদ বাস্তবায়ন, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার ও সাংবাদিকদের চাকুরীর নিশ্চয়তার জন্য তিনি সোচ্চার ছিলেন। দীর্ঘ সময় সাংবাদিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
বক্তারা বলেন, পেশাগত জীবনের পাশাপাশি তালা উপজেলার খেশরা ও তার পাশ্ববর্তী এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ নির্মাণ ও সংস্কারে তিনি ছিলেন নিবেদিত কর্মী। ভূমিহীনদের জন্য নদীর চরে ১শ’ বিঘা জমি বরাদ্দ করতে সক্ষম হয়েছেন। এক্ষেত্রে দূর্নীতি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তার কর্ম আমাদের আছে আজ অম্লান হয়ে থাকবে। শুরুতে জাতীয় সংঙ্গীত পরিবেশন করা হয়এবং তার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদক কওে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।