1. admin@naragatirsangbad.com : admin :
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
চন্দ্রকোনার জাড়া গ্রামে সখের কাকাতুয়াকে বাঁচাতে গিয়ে, পুকুরে জলে তলিয়ে গেল যুবক। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোহনপুরের কাছে ট্রাক মালিকরা ব্রীজের উপর শুয়ে পড়লেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসীর উপর হামলায় সিবিআই ইউকের তীব্র প্রতিবাদ। সেনাপ্রধানের সাথে সাক্ষাৎ করলেন রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর সদস্যগণ। গোপালগঞ্জের বিসিক উদ্যোক্তা মেলা-২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন। ঘাসফুলের বার্ষিক সাধারণ সভা ও দায়িত্ব হস্তান্তর।পটুয়াখালী ভার্সিটিতে কিশোরগঞ্জে ৭৩১ কোটি টাকার বাইপাস প্রকল্প বন্ধ, অসুবিধার শিকার স্থানীয় এলাকাবাসী। কক্সবাজারে অবৈধ আচারের কারখানার সয়লাব।   খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন  বিএনপি যোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নড়াইলে আগদিয়ার কর্মী সভা হয়েছে।

প্রচণ্ড প্রতিরোধ যুদ্ধের পর ১৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় খুলনা 

নড়াগাতীর সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

 

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি

আজ ১৭ ডিসেম্বর খুলনা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু তখনও খুলনায় চলে প্রচণ্ড যুদ্ধ। যশোর রোড ধরে খুলনায় আসার পথে শিরোমনি এলাকায় মিত্রবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। খুলনা শত্রুমুক্ত হয়েছিল একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর। বীর মুক্তিসেনারা লড়াই করে খুলনা শহর দখলমুক্ত করেন এই দিন। এরপর খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে শত্রুপক্ষ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ওই দিনই বিজয়ের পতাকা ওড়ে খুলনায়।

চূড়ান্ত বিজয়ের আগে ১৯৭১ সালের শেষ দিকে দক্ষিণাঞ্চলের শ্যামনগর, দেবহাটা, সাতক্ষীরা হানাদারমুক্ত হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে যায়। তখন তাদের একটাই লক্ষ্য, খুলনাকে মুক্ত করা। কপিলমুনির ভয়াবহ যুদ্ধের পর দক্ষিণাঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর সামনে আর কোনও বাধা না থাকায় মুক্তিযোদ্ধারা একটি লঞ্চে রওনা দিয়ে বারআড়িয়া-মাইলমারা হয়ে বটিয়াঘাটায় আসেন এবং জলমা-চক্রাখালি হাইস্কুল ভবনকে ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করেন।

১০ ডিসেম্বর সকালে লঞ্চে বসে মেজর জয়নুল আবেদীন খান, গাজী রহমত উল্লাহ দাদু, শেখ কামরুজ্জামান টুকু, মীর্জা খয়বার হোসেন, লেফটেন্যান্ট আরেফিন, শেখ ইউনুস আলী ইনু, স ম বাবর আলী, সাহিদুর রহমান কুটু, শেখ আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা খুলনা শহর শত্রুমুক্ত করার মূল পরিকল্পনা করেন। সে সময় হানাদার বাহিনী গল্লামারী রেডিও স্টেশন, খুলনা লায়ন্স স্কুল, পিএমজি কলোনি, শিপইয়ার্ড, ৭নং ঘাটের জেটি, টুটপাড়া, বয়রা ফায়ার ব্রিগেড স্টেশন, ওয়াপদা ভবন, খালিশপুরের গোয়ালপাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র, গোয়ালখালী ও দৌলতপুরের কয়েকটি স্থানে অবস্থান করছিল। তখন সিদ্ধান্ত হয় যে, মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে খুলনা শহরে প্রবেশ করবেন এবং কোনও বাধা এলে তা সশস্ত্রভাবে প্রতিহত করবেন। ফাহিম উদ্দিন ও লেফটেন্যান্ট নোমান উল্লাহর নেতৃত্বে তার বাহিনী সেনের বাজার, রাজাপুর ও রূপসা ঘাটের দিক থেকে; বোরহান উদ্দিন ও তার বাহিনী ক্রিসেন্ট জুটমিল ও এর পাশে নৌঘাঁটিতে; ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টার ও তার বাহিনী কুলুটিয়া নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে খুলনা রেডিও স্টেশনে; আফজাল ও কুতুব উদ্দিন তাদের বাহিনী নিয়ে ঝড়ডাঙ্গা ও সাচিবুনিয়ার দিক থেকে পাক সেনাদের লায়ন্স স্কুলের ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়ে খুলনা শহরের দিকে প্রবেশ করেন।

এরপর মুক্তিযোদ্ধারা বেতারে শুনতে পান, মিত্র বাহিনীর কমান্ডার মানেক শ’ র আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি সেনারা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণ করছে, কিন্তু খুলনায় তারা আত্মসমর্পণে রাজি হচ্ছে না। এই সংবাদ পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা শহরের দিকে এগিয়ে যান। ১৬ ডিসেম্বর যেদিন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে সেদিন খুলনা শহর ও এর আশপাশে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর বিচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধ চলছিল। সড়কপথে যশোর রোড ধরে খুলনায় আসার পথে শিরোমনিতে মিত্রবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের ব্যাপকসংখ্যক হতাহত হয়।

১৭ ডিসেম্বর ভোরে শিপইয়ার্ডের কাছে রূপসা নদীতে বটিয়াঘাটা ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি লঞ্চ এসে পৌঁছে। কিন্তু শিপইয়ার্ডের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা পাক সৈন্যরা লঞ্চটিতে গুলি করে। মুক্তিবাহিনীও লঞ্চ থেকে নেমে শিপইয়ার্ডের ওপারের ধানক্ষেতে অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলি চালায়। অবশেষে সব বাধা অতিক্রম করে ১৭ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করেন। খুলনা সার্কিট হাউস দখল করার পর মেজর জয়নুল আবেদীন ও রহমত উল্লাহ দাদু যৌথভাবে সার্কিট হাউসে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।

মুক্তিযোদ্ধা স ম বাবর আলী, আবুল কালাম আজাদ, রেজাউল করিম, গাজী রফিকুল ইসলামসহ অনেকে হাদিস পার্কে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। মিত্রবাহিনী খুলনা শহরে প্রবেশ করার ৮ ঘণ্টা আগেই হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এরপর খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের দফতর থেকে ব্রিগেডিয়ার হায়াত খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে রওনা হন। পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজিত বিধ্বস্ত সৈন্যরাও সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে রওনা হয়। রাস্তায় তখন হাজারো মানুষের ঢল নামে। সবার মুখে ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি। সবাই ছোটেন খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে। ১৭ ডিসেম্বর সার্কিট হাউস ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণের পর সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ প্রাণভরে গ্রহণ করেন স্বাধীন বাংলার মুক্ত বাতাস।

ডুমুরিয়ার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ডিসেম্বর মাস থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৩ ডিসেম্বর ডুমুরিয়া মুক্ত হয়। আর ১৭ ডিসেম্বর খুলনা মুক্ত হয়। ১৩ ডিসেম্বর ভোরবেলা বড়ইকাঠি থেকে রওনা হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গ্রুপ নদীপথে ডুমুরিয়া সদরে পৌঁছে বেলা ৯টা নাগাদ। অপর একটি গ্রুপ সড়কপথে নকাঠি হয়ে মইখালী বাজারে ওঠেন। এরপর রাজিবপুর হয়ে সোয়া ৯টার দিকে ডুমুরিয়া সদরে আসেন। লক্ষ্য ছিল ডুমুরিয়া সদরের থানা ভবনে থাকা পাক হানাদারদের পরাস্ত করা। দুটি টিমের গোলা বর্ষণের শব্দে থানা ভবনে থাকা পাক হানাদাররা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তারা সাজিয়ারা হয়ে টাবুরে দিয়ে নদীপথে দৌলতপুর ওঠে। এর মধ্য দিয়ে ডুমুরিয়া মুক্ত হয়। এরপর ১৭ ডিসেম্বর আমরা ডুমুরিয়া থেকে বটিয়াঘাটা হয়ে গল্লামারী দিয়ে শহরে প্রবেশ করে খুলনাকে হানাদারমুক্ত করতে সহায়তা করি।’

Facebook Comments Box

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ নড়াগাতীর সংবাদ।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park