নতুন ভোটারদের নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি বলেন, ‘প্রথম ভোটটি যেন ব্যর্থ না হয়।’
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে কোটালীপাড়া পৌরসভার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। এ সময় জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের রাজনীতির পট পরিবর্তনের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের বিচার না করে পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান।
দুপুরে কোটালীপাড়ায় জনসভাস্থলে এসে পৌঁছান শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। ছবি: ইত্তেফাক
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে দলের সভাপতি বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করা হয়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের কথা বলে তিনি বলেন, ‘বাবার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন। তার মুখে এগুলো শুনে শুনে বড় হয়েছি।’ এ সময় কেউ ভূমিহীন থাকবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি উন্নয়নের কথা বলতে চাই না। যা হয়েছে সেটা আপনারা নিজেরাই জানেন। দেশটা বদলে গেছে এখন। আমি চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে। তারা দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ করবো।
নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র যারা করে, তাদের একদিন শাস্তি পেতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যারা নাক গলাতে আসে, তাদের কোনোভাবেই মেনে নেবে না বাংলাদেশ।
নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ এই নির্বাচন খুব শান্তিপূর্ণভাবে হতে হবে। এই নির্বাচন যাতে না হয় তা নিয়ে যে চক্রান্ত, তার সমুচিত জবাব ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা দেব। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।
সেই সঙ্গে বারবার নিজের প্রাণনাশের অপতৎপরতার বিষয়টি এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যার বিচার করতে গিয়ে অনেক বাধা এসেছে। মামলার রায়ের দিন বিচারক যেনো কোর্টে উপস্থিত না হতে পারে সেজন্য হরতাল ডেকে খালেদা জিয়া বাধা দিয়েছিল। এ বিচার করতে গিয়ে অনেক বাধা এসেছে। কিন্তু আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
কোটালিপাড়ার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানসহ পাকিস্তানি দোসরদের চক্রান্তে ১৫ আগস্ট আমরা আপনজন হারিয়েছিলাম। আমাদের দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। আমি খুনিদের বিচার করেছি। আমাকে অনেকেই তখন বলেছিল তুমি পারবে না, তোমাকেও ওরা মেরে ফেলবে। আমি বলেছি, জীবনের মায়া করি না। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাব। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ দেশে চলতে পারে না। খুনিদের বিচার এ দেশে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। এরপর জিয়াউর রহমান তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জাতির পিতা যাদের কারাগারে ভরেছিলেন, জিয়াউর রহমান তাদের মুক্তি দিয়েছেন। যারা পাকিস্তান চলে গিয়েছিল তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে মন্ত্রী বানায়, গাড়িতে পতাকা তুলে দেয়।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বেলন, ‘বিএনপির আন্দোলন হলো মানুষ পোড়ানো, মানুষের ক্ষতি করা, দেশের সম্পদ নষ্ট করা। তাদের মধ্যে দেশপ্রেমও নেই, দায়িত্ববোধও নেই।’