ওয়াহিদ মুরাদ, বিশেষ প্রতিনিধি, খুলনা
প্রতিটি শিশুর জন্মের মুহূর্তটি আনন্দঘন। তবে সেখানেও মিশে থাকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। কারণ সে শিশু পৃথিবীতে না আসা পর্যন্ত মা ও শিশু দুজনেই থাকেন ঝুঁকিতে। সন্তান গর্ভে আসার পর থেকেই চ্যালেঞ্জিং সময় পার করেন একজন মা। সেই চ্যালেঞ্জ পদে পদে বাড়তে থাকে যখন মা টের পান তার গর্ভে এক নয় একাধিক সন্তানের অস্তিত্ব। সেই সন্তানদের নিরাপদে পৃথিবীর আলো দেখানোটা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং মা ও চিকিৎসকদের জন্য।
সম্প্রতি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ব্রহ্মগাতী গ্রামের তফুরা খাতুন নামে এক নারী একসঙ্গে তিন জমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। জানা যায় তফুরা খাতুন এর বাবার বাড়ি সাতক্ষীরায় । সেখানকার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে কোন প্রকার অস্ত্রপচার ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হয়েছে একসঙ্গে তিন শিশুর। এ ঘটনায় তফুরার শ্বশুর বাড়ি দিঘলিয়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তোফুরা খাতুনের স্বামী রুবেল শেখ জানান, গত ১৬ মে বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় তফুরা খাতুন প্রসব বেদনা নিয়ে তার বাবার বাড়ির এলাকার সাতক্ষীরা ইসলামিক হাসপাতালে ভর্তি হন, পরে সকাল ১০টার দিকে কোন প্রকার অস্ত্রপচার ছাড়াই চিকিৎসকদের সহায়তায় স্বাভাবিকভাবে তার তিন পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন নবজাতক এবং তাদের মা সুস্থ আছেন। একসঙ্গে তিন পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়ার খবরে খুশি তফুরার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনেরা।নবজাতকদের পিতা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা বলেন, নতুন শিশুর জন্ম মানেই হল আনন্দ আর তা যদি হয় একসঙ্গে তিনটি তাহলে তো সে আনন্দের মাত্রা বেড়ে যায় আরো অনেক গুন। আমাদেরও ঠিক তাই হয়েছে।
নবজাতক ৩ শিশুর পিতা মোঃ রুবেল শেখ বলেন, শিশু ৩টি আমার স্ত্রীর গর্ভে আসার পর থেকে তাকে ডাক্তারের চেকআপে রেখেছিলাম। তার গর্ভে যে তিনটি সন্তানের অস্তিত্ব আছে সে বিষয়টি ডাক্তার আমাদের আগে থেকেই নিশ্চিত করেছিলেন। শিশু তিনটি স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণে তিনি মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং শুকরিয়া আদায় করেন। তিনি আরো বলেন, শিশু তিনটি জন্মের পর তাদের প্রথমে হাসপাতালের গ্লাস দ্বারা আবৃত ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে শিশু তিনটিকে ৯ দিন পরে রিলিজ করা হলে আমরা তাদের বাড়িতে নিয়ে আসি। নবজাতক তিন শিশুকে তার মায়ের দুধের পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বায়োমিল নামের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। তিন শিশু এবং তাদের মা সবাই সুস্থ আছে। নবজাতক তিন শিশুর নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে আব্দুল্লাহ, মাহমুদুল্লাহ এবং আহমাদুল্লাহ। উল্লেখ থাকে যে, রুবেল শেখ ও তফুরা খাতুনের পরিবারে ফারিয়া নামের ৯ বছর বয়সের আরেকটি কন্যা সন্তান আছে। সে এখন ক্লাস থ্রিতে পড়াশোনা করে।