শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের ভাগ্য বদল হয়েছে মৎস্য ঘেরের উপর শাকসবজি চাষ করে। মাছ চাষের পাশাপাশি কৃষকরা মৎস্য ঘেরে বেড়ী বাঁধের উপর বিভিন্ন সবজির চাষ করে অতিরিক্ত লাভবান হচ্ছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের নকাটি গ্রামের রাশেল হোসেন মোল্লা বলেন, মৎস্য খামারের বেড়ী বাঁধে চারিদিকে লাউ শিম, পেঁপে, পুইশাক, ঝিঙ্গা, ধেড়স, বরবোটি’, শশা এবং বেগুন চাষ করছি। দু’বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন এর পরামর্শ পাওয়ার পরে আমি আমার মৎস্য খামার গুলিকে সবজি চাষের আওতায় আনতে অনেকাংশে অনুপ্রাণিত হয়েছি।
চার বছর আগে তিনি মাছ চাষ শুরু করার পর থেকে তার মৎস্য খামারের বেড়ী বাঁধের খালী যায়গা গুলো বছরভর পড়ে ছিল। তিনি তার মৎস্য খামারের পাড়ে কেবল বরবটী চাষ করেই প্রথম বছরে কিছুটা লাভ অর্জন করেছিলেন। পরের বছরে বাঁশ দিয়ে তৈরি ওভার-হেড এবং অন-ল্যান্ড বেড়া উত্থাপনের পরে আসাদুজ্জামান এক সাথে বেড়ী বাঁধে লাউ ,শিম, বরবোটি, লাল শাক,পালঙ শাক, শসা এবং পেঁপের চাষ শুরু করে তার অবস্থার দৃশ্য পরিবর্তন করে ফেলেন।
ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রামের আসাদুজ্জামান জানান, প্রতি বিঘা জমির দাম ১০ হাজার টাকা, বর্তমানে ২৫ বিঘা জমিতে আমার মৎস্য ফার্মের সবজি চাষের ব্যাংক রয়েছে। গত বছর মৎস্য ব্যাংকের লাভ পেয়েছিলাম প্রায় ১২ লাখ টাকা।
গত মৌসুমে বেশ ভালো মুনাফা অর্জনের পরে আসাদুজ্জামান ইতোমধ্যে এই মৌসুমে দুর্দান্ত দাম পেতে প্রাথমিক শিম, বেগুন, বরবটি এবং পেঁপে বিক্রি শুরু করেছেন। তিনি আরো বলেন, আমি আশাকরি আগামী বছরের মার্চ অবধি এই মৌসুমে আমার মৎস্য খামারের বেড়ীবাঁধের ৪ লাখ টাকারও বেশি পণ্য বিক্রি হবে। আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ।
আসাদুজ্জামান তার পরিবারের পাঁচজন সদস্যের সমন্বয়ে সচ্ছলতা আনার পরে দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠতে মাছ চাষ এবং শাকসবজি আন্তঃচাঁপ পদ্ধতি অবলম্বন করে বেশ ভালো উপার্জন করছেন। আসাদুজ্জামান বলেন, সবজি চাষের ব্যয় প্রায় একই রকম হয় যেহেতু প্রতি বছর পাড় এবং খালি যায়গাগুলোতে বেড়া নির্মাণ করা দরকার। শাকসবজির শীত কালীন সময়ে তার জন্য কেবলমাত্র সামান্য কীটনাশক স্প্রে করা প্রয়োজন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র বলেন, পাড়ে সবজি চাষে আসাদুজ্জামানের সাফল্য লক্ষ্য করে এই উপজেলার অনেক কৃষক ইতোমধ্যে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ফসলি জমি, মৎস্য ফার্ম এবং পুকুরের পাড়ে এবং সবজির চাষ শুরু করেছেন। ডিএই কর্মকর্তারা আসাদুজ্জামান এবং অন্যান্য অনেক কৃষককে তাদের উদ্যোগকে প্রসারিত করতে সহায়তা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছেন। আসাদুজ্জামান পাড়ের অঞ্চল এবং অন্যান্য কৃষকদের জন্য আইকন হয়ে উঠতে তার মৎস্য খামার গুলির বেড়ীবাঁধ এবং খালি যায়গাগুলিতে শাকসবজি চাষে অনুকরণীয় সাফল্য অর্জন করেছেন।