বিশেষ প্রতিনিধি
ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে একাধিক বিবাহের অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার পারকুশলি গ্রামের সাদি শেখের ছেলে ফয়জুল ইসলাম সুমন (৩৫) এর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন যাবত পরিচয় গোপন করে তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে এবং কিছু দিন সংসার করার পর টাকাপয়সা সহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে কৌশলে সটকে পড়ে বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত ফয়জুলের সাতটি বিয়ের খবর পাওয়া গেছে এবং তার মধ্যে তিনটি নিকাহ নামায় নাম ও পরিচয়ে ভিন্নতা দেখা গেছে। এ ছাড়া চার স্ত্রীর সাতটি সন্তান রয়েছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় ফয়জুলের তৃতীয় স্ত্রী ইলমা বেগম গোপালগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী স্ত্রীরা জানায়, আনুমানিক ১৬/১৭ বছর পূর্বে ফয়জুল প্রথম স্ত্রী নার্গিসকে গোপনে বিবাহ করে তার সংসারে ১৫ বছরের একটি ছেলে ও ১২ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে, দ্বিতীয় স্ত্রী বাগেরহাট জেলার মোল্যাহাটের হিরা বেগমকেও গোপনে বিবাহ করে। তার সংসারে রয়েছে তিনটি সন্তান, তৃতীয় একই জেলার চিতলমারী থানার হিজলা গ্রামের কিবরিয়া শেখের মেয়ে ইলমাকে পূর্বের বিবাহ গোপন রেখে পারিবারিক ভাবে বিবাহ করে, সেই সংসারে সিফাত নামে তিন বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, ৪র্থ স্ত্রী টাঙ্গাইলের ফাতেমা বিগম, ৫ম স্ত্রী দিনাজপুরের শ্যামলী, ৬ষ্ঠ স্ত্রী খুলনার শিরোমনি এলাকার নাজমিন বেগম এবং শিরোমণি খুলনা,৭ম স্ত্রীও খুলনা জেলার জিনিয় কে বিবাহ করে। এদের মধ্যে তৃতীয় স্ত্রী ইলমার সাথে বিবাহের সময় নিকাহ নামায় সঠিক নাম পরিচয় ব্যাবহার করলেও খুলনার জিনিয়াকে আমিনবাজার, সাভার, ঢাকা এবং টাংগাইলের ফাতেমাকে মেরাদিয়া, খিলগাঁও, ঢাকার ঠিকানা দেখিয়ে বিয়ে করে ফয়জুল। সর্বশেষ ফয়জুল বিদেশে যাওয়ার কথা বলে তৃতীয় স্ত্রী ইলমার নিকট থেকে ২লাখ টাকা নিয়ে নকল ভিসা পাসপোর্ট দেখিয়ে পরিবার সহ এয়ারপোর্টে গিয়ে বিদায় নেওয়ার নাটক করে। তার কিছু দিন পরে জানা যায় সে বিদেশ না গিয়ে পরিবারের সাথে প্রতরনা করে ফাতেমা,শ্যামলি, নাজমি এবং জিনিয়াকে বিয়ে করেছে। অতঃপর ইলমা তাদের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনা খুলে বললে বেরিয়ে আসে ফয়জুলের আসল চেহারা। অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে ফয়জুল বলে জানান ইলমা বেগম। এক পর্যায়ে তিনি ফয়জুলের সীমাহীন কুকীর্ত্তির বিষয় জেনে গেলে তাকে মারধর করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরিশেষে নিরুপায় হয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফয়জুলের সাথে তার মুঠোফোনে কথা হলে প্রথমে দুটো এবং পরবর্তীতে তিনটি বিবাহ করেছেন বলে স্বীকার করেন। এছাড়া ওই সকল ঘরে তার ৭টি সন্তান রয়েছে বলেও জানান। নাম পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বাকী চারটি বিবাহের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন এবং নিউজ করলে সাংবাদিকদের তিনি মামলায় ফাঁসাবেন বলে ভয় দেখান।