ওয়াহীদ মুরাদ স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ক্ষমতা স্থায়ী করতে প্রথমে পিলখানা হত্যাকান্ড ও পরে জামায়াত নেতাদের ফাঁসী দিয়েছে। বিগত ১৫ বছর ধরে দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছিল। হত্যা, গুম ও নির্যাতন চালিয়ে তারা দেশের মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আসলে আওয়ামী লীগ মানুষকে মানুষ মনে করেনি।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৮ টায় খানজাহন আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত খানজাহান আলী থানা আমীর সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটোর সভাপতিত্বে ইস্টার্ন জুট মিলস শ্রমিক ময়দানের কর্মী সন্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যাচার নির্যাতন, গুম, খুন, ঘুষ ও দুর্ণীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে মানুষ এদের থেকে পরিত্রাণ পেতে চাচ্ছিল। এদেশের তরুন ছাত্র সমাজ তাদের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করেছে। এ দেশের রাজমৈতিক দল আন্দোলন করে এ সরকারকে হঠাতে পারেনি। ছাত্র সমাজের আন্দোলনের মুখে তারা এ দেশ থেকে পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তবে তাদের পালাতে কারা সহায়তা করেছে তা দেশের মানুষ জানতে চায়।
তিনি বলেন, ছাত্র জনতার এ বিজয় তারা নষ্ট হতে দিতে চায়না। তরুন সমাজ চায় এদেশের মানুষকে একটা সুখি ও সুন্দর দেশ উপহার দিতে। যেখানে ধনী গরিব কোনো ভেদাভেদ থাকবেনা। আমার দেশের মা-বোনেরা নির্ভয়ে পথ চলতে পারবে। ছাত্রীরা যাতে নির্ভয়ে নিরাপদে গন্তব্যে যেতে পারে তেমনি দেশ গঠন করতে হবে।
আমীরে জামাত বলেন, ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিদায় ছাত্র জনতার বিজয়। এ দেশটাকে এদেশের তরুনদের মত করে ভালোভাবে সাজাতে দিতে হবে। তাদের কাছে দেশ ও দেশের মানুষের জীবন রক্তের মূল্য থেকে অনেক বেশী। তারা বৈষম্য চায়না ন্যায় বিচার চায়। এদেশের মাটি আমাদের মাটি, এদেশের মানুষ আমাদের মানুষ। আমরা সুদ ও দুর্ণীতি মুক্ত একটা সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মিল কলকারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের কর্মহীন করেছে। এ মিলগুলো চালু করে শ্রমিক বৈষম্য দূর করতে হবে। বিল ডাকাতিয়ার জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান করে এ অঞ্চলের কৃষকদের দুরাবস্থা দূর করতে হবে। কৃষক ও শ্রমিক ধ্বংস করে দেশ বাঁচবে না। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, শ্রমিক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।
তিনি বলেন, সকল দেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক থাকবে। তবে এ সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বের, প্রভু সুলভ নয়। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, কারো বক্তব্য বিকৃত করে শান্তি বিঘ্ন ঘটানো যাবে না। বেশি বা কম লেখার প্রয়োজন নেই, যেটা সত্য সেটাই মিডিয়া কর্মীরা লিখবেন। তিনি বলেন সাংবাদিকদের এখন আর কোনো বাধা নেই। তাদের কলম স্বাধীন। এমন লেখা লিখতে হবে যাতে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণ হয়।
এ কর্মী সন্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা সহকারী অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মসলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হোসাইন, কেন্দীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার, খুলনা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা কবিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারী মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি খুলনা জেলা মুন্সী মঈনুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি খুলনা জেলা অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, সহকারী সেক্রেটারি খুলনা জেলা প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী প্রমূখ।