কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। সন্ধ্যার পর কিশোররা কেন বাড়ির বাইরে থাকে-সেটির খোঁজ নেয়ার দায়িত্ব অভিভাবকদের। অভিভাবকরা প্রয়োজন ছাড়া টাকা-পয়সা তাদের কিশোর সন্তানের হাতে তুলে দিয়ে আরো বিপদগামী করছে। এক্ষেত্রে পারিবারিক বন্ধনটা আরো সুদৃঢ় করতে হবে। দেশের সকল অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানের ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। কিশোরগণ স্বাধীনচেতা হয়। সংসারে তাদের কথাবার্তা গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে এবং ন্যুনতম চাহিদা পূরণ করতে হবে। তবে অতিরিক্ত টাকা পয়সা খরচ এবং যখন যেটা চাইবে তখন তা তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহ করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন জরুরী। তাদের জীবেনযাত্রায় কোন অনাকাংখিত অসংগতি পরিলক্ষিত হলে তাদের টাকা পয়সা খরচসহ চলাফেরায় প্রয়োজনে সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে।
সঠিক বন্ধু নির্বাচনে ভুল করা এবং তথ্য প্রযুক্তির অপব্যাবহার আমাদের কিশোর কিশোরীদের বিপদগামী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিশোর কিশোরদের সততা, ন্যায়পরায়নতা, উত্তম ব্যাবহার, বড়দের সন্মান করা, ছোটদের আদর করা, আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সংগে সদ্ব্যবহার করা, আর্তের সেবা করা, সহনশীলতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, ধর্মীয় এবং মানবিক মূল্যবোধ সংক্রান্তে শিক্ষা দান করা অতি জরুরী। সন্তানের সাথে অভিভাবকদেকে বন্ধু’র মতো আচার-আচরণ করতে হবে।
রাষ্ট্র, সমাজ ও আগামী দিনে জাতি গঠনে কিশোর কিশোরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে তাদের সামগ্রিক ধারনা দিতে হবে। শৃংখলা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য গুনাবলী। তাদের মধ্যে শৃংখলাবোধ গড়ে তুলতে হবে। সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিং, জঙ্গিবাদ এবং তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যাবহার বিরোধী মনোভাব গড়ে তুলে তুলতে হবে। ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, ধর্ম এবং দেশপ্রেম সংক্রান্তে তাদের মধ্য পজিটিভ ধারনা দেয়া প্রয়োজন। আমাদের সন্তানদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। মানব জাতির ক্রমবিকাশ, এতদসংক্রান্তে ভুগোল, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, বিজ্ঞান এবং বিখ্যাত মনিষিদের জীবনি গ্রন্থ পাঠোভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। আসুন আমাদের সন্তানদের মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলি।