কালিয়া ( নড়াইল) প্রতিনিধি
নড়াইলের কালিয়ায় কেন্দ্রীয় যুবদলের কর্মসূচি পালনের নিউজ করার সময় সাংবাদিক এস,এম হাফিজুল করিম নিলুর উপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর, মোবাইল, নগদ টাকা ও স্বর্ণের চেইন ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে কালিয়া পৌর যুবদলের সদস্য সচিব পল্টু ও তার ভাই খসরুর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় নড়াইল জেলা যুবদলের পক্ষ থেকে কালিয়া পৌর যুবদলের সদস্য সচিব কে ৭২ঘন্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
ওই সাংবাদিকের অপরাধ কালিয়া পৌর যুবদলের সদস্য সচিবের অবৈধ বালুর ব্যবসা নিয়ে তিনি সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। তার জেরেই যুবদলের গণসংযোগে ওই সাংবাদিককে পেয়ে ক্যামেরা ভাঙচুর মোবাইল, নগদ টাকা ও গলার চেইন ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে ।
অন্যদিকে, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শায়দাত কবির রুবেল বলছেন, সাংবাদিক হাফিজুল নিলুকে নিজেরাই নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের নিউজ কাভারের জন্য। বিষয়টি নিয়ে তারাও অনুতপ্ত। তবে তদন্ত-পূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
হামলার শিকার সাংবাদিক এস এম হাফিজুল করিম নিলু নড়াইলের সিনিয়র সাংবাদিক। তিনি মোহনা টেলিভিশন, জাগো নিউজ, দৈনিক নয়া শতাব্দী, সময়ের আবর্তন ও রাতদিন নিউজের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। এছাড়াও তিনি রাতদিন নিউজের প্রতিনিধি ফোরামের সভাপতি।
নিলু জানান, কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল, নড়াইল জেলা যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ মশিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শায়দাত কবির রুবেল, কালিয়া যুবদলের কামাল সিদ্দিকীসহ যুবদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা কালিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগে করবেন সেটা তাকে অবগত করলে যুবদলের সাথে তিনি যান। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিলো। ফেরার পথে ফেরার পথে তাকে বারইপাড়া ঘাটে চা খাওয়ার কথা বলে পাশে নিয়ে যান কালিয়া পৌর যুবদলের সদস্য সচিব পল্টু ও তার ভাই খসরু। কিছু বোঝার আগেই তাকে মারপিট শুরু করেন তারা। ক্যামেরা ভাঙচুর মোবাইল নগদ টাকা ছিনিয়েনেয়া হয় তার থেকে। এরপর তাকে আটকে রাখে এবং জোরপূুর্বক ভিডিও করে। বিষয়টি জানতে পেরে নড়াইল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি চয়ন বাবু তার লোকজন নিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শায়দাত কবির রুবেল বলেন, সাংবাদিক হাফিজুল নিলু আমাদের সাথে আমাদের নিউজ কাভার করতে গিয়েছিল। তার উপরে হামলায় ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এবং পরবর্তীতে তদন্ত-পূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নড়াইল জেলা যুবদলের সভাপতি মোঃ মশিউর রহমান বলেন খবরটি শুনে এবং সাধারণ সম্পাদক সায়দাত কবির রুবেলকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
এ বিষয়ে কালিয়া পৌর যুবদলের সদস্য সচিব পল্টুর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভাব হয়নি। তবে তার ভাই খশরু বলেছেন তিনি বিদেশে থাকতেন।সম্প্রতি দেশে এসে তিনি সাবেক কাউন্সিলার কমলাকি বিশ্বাসের কাছেথেকে লিজ নিয়ে বালির ব্যবসা শুরু করেন। পরে জানতে পারেন বালুর ব্যবসার বৈধতা নেই। এজন্য একটি চক্র তার কাছথেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন কথা বলে টাকা নিয়েছে। আজ মিলুকে পেয়ে মেহেদী নামে তার এক ভাই মিলুকে পেয়ে চরথাপ্পর মেরেছে। কিন্ত পরে স্থানীয় বিএনপির নেতারা থেকে মিটিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেন খসরু।
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর নিলু বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কালিয়া পৌর যুবদলের সদস্য সচিব পল্টু ও তার ভাই খসরুর অবৈধ বালু ব্যবসা নিয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয় বেন্দা এলাকার নবগঙ্গা নদীর তীর ভেঙ্গে যাচ্ছে। যার নেপথ্যে রয়েছে পৌর যুবদলের সদস্য সচিব পল্টু ও তার ভাই খসরুর অবৈধ বালু ব্যবসা। এনিয়ে স্থানীয়রা মানববন্ধনও করেন যা নিয়েই মুলত সংবাদটি প্রচার করা হয়েছিলো। যা কাল হয়ে দাড়ালো সাংবাদিক হাফিজুল নিলুর জীবনে।
সন্ত্রাসীরা আটকে রেখে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করে ভিডিও করে সামাজিক গণমাধ্যমে ছেড়েছে। এ ঘটনায় সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা ও জোরপূর্ব ভিডিও করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ছাড়ার নিন্দার ঝড় উঠেছে। দ্রুত এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সাংবাদিক সমাজ।