1. admin@naragatirsangbad.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
লোহাগড়ায় নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হরিণাকুন্ডু পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯৫ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত।  খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে ঢাকাস্থ ইরানি রাষ্ট্রদূত মনসুর চাভোশির দলিত জনগোষ্ঠীর ঝরেপড়া ১৪০ শিক্ষার্থী পেল শিক্ষা উপকরণ  লোহাগড়ায় সর্বদলীয় নেতা মেম্বার ধলু, যে দল ক্ষমতায় যায় সেই দলই তার  লোহাগড়ায় পুলিশের পৃথক দুটি অভিযানে ইয়াবাসহ পুরুষ ও নারী ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার।  গোপালগঞ্জে জেলা বিএনপির নতুন আরো একটি কার্যালয়ে উদ্ভোধন রামপালে স্বপযাত্রার শিশুদের উদ্ভাবনী উৎসব মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক কমিটি গঠন সভাপতি শহিদুল, সম্পাদক শামীম। বাগেরহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির নামে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

আদর্শ শিক্ষক হিসেবে বাবাই ছিলেন আমার শ্রেষ্ঠ নায়ক সেলে, মুহাম্মদ ইমাদুল হক প্রিন্স

নড়াগাতীর সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১১৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

 

দুমকী উপজেলা ও পবিপ্রবি, (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

আদর্শ শিক্ষক এর প্রথমেই আসে আদর্শ শব্দটি যা বিশ্লেষণী ও সম্মোহনী বিশেষণ বোধক শব্দ । এটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হল আইডিয়েল যার বাংলা অর্থ উপযুক্ত, অনুসরণীয়, শ্রেষ্ঠ, দৃষ্টান্তমূলক, সঠিক, দুর্দান্ত , রোমান্টিক ইত্যাদি। এই শব্দটির ব্যাখ্যা গত দিক থেকে বলা যায়, যা নিখুঁত, যা সবচেয়ে উপযুক্ত, যা অনুসরণীয়, পরিপূর্ণতার একটি মান, শ্রেষ্ঠত্বের একটি চূড়ান্ত মান। তাহলে অদর্শ শিক্ষক বলতে বোঝায় যেই শিক্ষকের মধ্যে উপর্যুক্ত বিষয়গুলো বিদ্যমান। আমার জীবনে এমন একজনকে পেয়েছি যিনি একাধারে একজন অভিভাবক, একজন শিক্ষক, একজন উপদেষ্টা, একজন বন্ধু সব মিলিয়ে যিনি একজন আদর্শ বাবা। আমার জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে তিনি আমার পথপ্রদর্শক। ছোট বেলা যিনি আমাকে হাত ধরে ধরে ভাল মন্দের পার্থক্য শিখিয়েছেন। শিখিয়েছেন কিভাবে প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে হয়। আর শিখিয়েছেন কিভাবে মানুষের দেয়া প্রলোভন বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দিতে হয়। আবার জীবনে কখনো হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে হাত ধরে উঠিয়ে বলতেন, ভয় পেয়োনা আমি আছি তো, যার বাবা আছে তার ভয় কিসের ? তিনি শিক্ষক ছিলেন বিধায় শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতেন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বসহকারে। তাই লেখা পড়া আর শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ছাড় দিতেন না এক কানা কড়িও। শৃঙ্খলাবোধ তার মধ্যে ছিল চরমভাবে। তাই কখনো কোন আত্মীয় বাড়ি যেতে হলে অনুমতি নেওয়া ছিল আবশ্যক। রাত করে বাড়ি ফেরা তো দূরে থাক, বাড়ির কাছে থাকলেও সন্ধার আগে ঘরে প্রবেশ করা ছিল বাধ্যতামূলক।

ছোটবেলা থেকে আমাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতেন কখনো আত্বীয়দের বাড়িতে, কখনো বাজারে, তার মাদ্রাসায়, কখনো কোর্টে, মাহফিলের মঞ্চে কোরআন তেলাওয়াত করতে, কখনো সালিশ বৈঠকে। তাই ছোটবেলা থেকে নিজের চোখে অনেক কিছু দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। সেই স্মৃতি আমার চোখের সামনে আজও ভাসছে।

তৃতীয় শ্রেণির গণ্ডি পেরিয়ে বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে আমার আব্বু যে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন, সেখানে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হই।

ক্লাসরুমেও আব্বুর শেখানো হাতে খড়ি। শৈশবটা পাড় করেছি আব্বুর হাত ধরে মাদ্রাসায় যাওয়া আসা আর ক্লাস রুমে আব্বুর পাঠদান। শিক্ষকের ছেলে হিসাবে পেতাম মাদ্রাসার সবার ভালোবাসা। নতুন মাদ্রাসায় যাব বলে আবেগ, উচ্ছ্বাস আর উৎকণ্ঠায় পরিপূর্ণ আমার মন। তাও আবার আব্বুর মাদ্রাসা বলে কথা। ১৯৯৩ সালের জানুয়ারি মাসে আব্বুর সঙ্গে পায়ে হেটে, লঞ্চে এবং নৌকায় শুরু হলো আমার নতুন মাদ্রাসায় যাওয়া। যেতে যেতে রাস্তায় আব্বুর সঙ্গে অনেক গল্প করতাম। হুজুর হুজুর বলে পথে অনেকেই আব্বুকে সালাম দিত। প্রথম প্রথম আমি অবাক হতাম, এত মানুষ আব্বুকে সালাম দেয়! তারপর হুট করে একদিন গণনা শুরু করলাম। বাড়ি ফিরে বলতাম আজ রাস্তায় ১৮ জন আব্বুকে সালাম দিয়েছে, আজ ১২ জন, আজ ২২ জন। আব্বু শুনে সুন্দর একটা হাসি দিতেন। তখন না বুঝলেও আজ বুঝি, সে হাসিতে মিশে ছিল কতটা প্রশান্তি, কতটা তৃপ্তি।

শিক্ষাজীবনে প্রিয় শিক্ষক বলতে গেলে আমার আব্বু। অভিনব পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি গ্রুপ ওয়ার্ক, বিতর্ক, দেয়ালিকা, খেলাধুলাতে তিনি খুব গুরুত্ব দিতেন। শুধু আব্বু বলে নয়, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বলছি, এই সহপাঠ্যক্রমিক বিষয়গুলোকে তাঁর মতো করে এত উৎসাহ অন্য কোনো শিক্ষকের কাছে আমি পাইনি। তিনি নিজে যেমন সৃজনশীলতা পছন্দ করতেন, তেমনি সৃজনশীল এবং ব্যতিক্রমী কাজে প্রতিনিয়ত তাঁর শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা জোগাতেন।

নিয়মানুবর্তিতা এবং সময়ানুবর্তিতার বিষয়ে আব্বু খুব সচেতনতা ও কঠোরতা অবলম্বন করতেন। বর্ষাকালে টানা বর্ষণে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত এমন একটি গ্রাম্য মাদ্রাসায় পড়া আমার অধিকাংশ সহপাঠী যখন বাসায় ঘুম দিত, তখন ছাতা মাথায় কাদামাখা পিচ্ছিল রাস্তায় পায়ে হেঁটে আমাকে ঠিকই মাদ্রাসায় যেতে হতো। কারণ, সময়মতো মাদ্রাসায় যাওয়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের দায়িত্ব। আব্বুর সঙ্গে এমন ছোটখাটো দায়িত্ব পালন করতে করতে এখন বড় হয়েও অভ্যাসটা রয়ে গেছে। হয়তো এ কারণেই যে কাজগুলো আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, দায়িত্ব বলে মনে করি কিংবা যেটার দায়িত্বভার আমার ওপর অর্পিত হয়, তা নিষ্ঠার সঙ্গে যথাযথভাবে পালনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। কারণ, এটা যে আমার বাবার কাছে শেখা।

জীবনের খুব বেশি বিলাসিতা শখ পূরণ না করতে পারলেও বই, খাতা, কলমসহ শিক্ষার সকল উপকরণ প্রয়োজন মত মেটাতে কোনো দিন কার্পণ্য করেননি। মাদ্রাসা ছুটি শেষে আমি বাজারের ব্যাগ নিয়ে বাজারে আসতাম। আব্বুতো জানতো আমার পছন্দের খাবার ছিল টেকেরহাট বাজারের মোসলেম এর দোকানের পড়াটা, মিস্টি, রুটি ভাজি ও সিংগাড়া যেদিন বাজারে যেতাম সেদিনই এ খাবারগুলো আমাকে খাওয়াতে তিনি মিস করতেন না।

আব্বুর সাথে বাজার করাটা আমার একসময়ের শখে পরিনত হয়। সেই থেকেই ভালো বাজার করাটা রপ্ত করে ফেলি। অন্য বাবাদের মতো আমার আব্বুও বলতেন তোমাদের কাছে কিছুই চাওয়ার নাই। আমার চাওয়া একটাই। তোমরা পড়াশোনা করে মানুষ হও, শিক্ষিত হও। নিজের এবং সমাজের মঙ্গল বয়ে আনো।

আমার জীবনের ৩৭টি বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এখনো মনে হয় এইতো সেদিনের ঘটনা। যে ঘটনাটি আমার চোখের সামনে বারবার আসে। আমি কষ্ট পাই তবুও মাঝেমধ্যে সেই দিনগুলোর কথা স্মৃতিচারণ করি। আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন আমার আব্বু মাওলানা মোঃ আব্দুল ওহাব (খুলনার হুজুর)। তিনি দেশের শীর্ষ ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্রগ্রামের হাটহাজারী দারুলউলুম মুঈনুল ইসলাম থেকে দাওড়ায় হাদিস (মাস্টার্স) ও দেশের অন্যতম শীর্ষ আলিয়া মাদ্রাসা ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসা থেকে কামিল (মাস্টার্স) হাদিস, ফিকহ্ ও তাফসির বিষয়ের উপর কৃতিত্বের সহিত সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি ডজনখানেকেরও বেশি আলিয়া মাদ্রাসায় চার দশকেরও বেশি সময় শিক্ষকতা করেন।

আব্বুর পাঁচ কন্যা, এক পুত্র ও স্ত্রীসহ ৮ জনের সংসার। বোন বড় তিনজন হাইস্কুলে, আমিসহ দুই বোন মাদ্রাসায় পড়তাম। আব্বুর ইচ্ছা সন্তানদের ভালো স্কুল-মাদ্রাসায় পড়িয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা । তখন মাদ্রাসার শিক্ষকরা বেতন পেতেন পাঁচ থেকে ছয় মাস পর। আব্বু, মসজিদে ইমামতি করে সকালে মক্তবে পড়িয়ে, প্রাইভেট টিউশনি করে কোনোমতে সংসার চালাতো। বেতনের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুণতে হতো মাসের পর মাস।

একদিন আব্বু বাড়ি থেকে ব্যাংকে তার বেতন উত্তোলন করতে গেলেন। সারাদিন আমরা পথ চেয়ে বসে আছি। আব্বু কখন আসবেন? আজ আব্বাু বেতন পাবেন, নিশ্চয় ভালো বাজার করে নিয়ে আসবেন। নানা কল্পনার জাল বুনতে বুনতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলো। সন্ধ্যা হলো। আব্বু আসছেন না!

আম্মু অনেক চিন্তিত, কোথায় গেলো, কী হলো! তখন মোবাইলে ফোনের যুগ ছিলো না। আশেপাশে হাতেগোনা সম্ভ্রান্ত ও বড়লোক পরিবারে টিএন্ডটি ল্যান্ডফোন ছিলো। সে সময় রাত ৯টা অনেক রাত মনে হতো। আম্মু দরজার সামনে যেয়ে দাঁড়িয়ে আব্বুর জন্য অপেক্ষা করছেন আর দোয়া দরুদ পড়ছেন। আমরাও আম্মুকে চিন্তিত দেখে ঘুমোতে পারছি না। সবাই চুপচাপ বসে আছি। আমি তখন অনেক ছোট। ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আব্বুর জন্য আমিও খুব চিন্তিত ছিলাম। সবার মনের মধ্যেই চিন্তা, ভয়, আতঙ্ক! আব্বুর কী হলো!

ঠিক এমন সময় আব্বু দরজার কড়া নাড়লেন। আমরা আব্বুর গলার আওয়াজ শুনে সবাই লাফ দিয়ে দরজার সামনে গেলাম। সবাই কৌতূহলী দৃষ্টিতে আব্বুর দিকে তাকিয়ে। চুপচাপ ও চেহারা মলিন। খুব ভারী গলায় কথা বলছেন। আম্মু রাগ করে বললেন, সারাদিন কোথায় ছিলেন? আব্বুর মুখে কোনো কথা নেই। আমরাও জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় ছিলেন আব্বু? আম্মু আব্বুকে বললেন, ছেলে-মেয়েরা সারাদিন অপেক্ষায় যে আপনি আজ ভালো বাজার করে আনবেন। আর আপনি এখন খালি হাতে এলেন? ঠিক আছে কাল সকালে বাজার কইরেন। আব্বু কোনো কথা বলছেন না, তার দুচোখ বেয়ে পানি ঝরছে। আব্বু অশ্রুসিক্ত হয়ে কাঁপা গলায় বললেন, আমার বেতনের সব টাকা মাদ্রাসার সভাপতি ও অধ্যক্ষ মাদ্রাসার উন্নয়ন করতে এবং তাদের বিভিন্ন খরচের জন্য নিয়ে নিছে । তখনকার সময় মাদ্রাসার বেতন জমা ও উত্তোলনে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষ’র হাতে অনেক ক্ষমতা ছিল। মাদ্রাসায় গিয়েছি, সভাপতির বাড়ি গিয়েছি যাতে বেতনের কিছু টাকা দেয় তাও তারা দেয়নি। অবশেষে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন। বৃষ্টির দিন বড় একটি নদী পার হওয়া এবং কাচা রাস্তার বেহাল অব্স্থার কারনেও ১৫ থেকে ২০ কিঃ মিঃ পথ হেটে আসতে এত দেরি হয়েছে।

আব্বুর চোখের পানির কষ্ট সেদিন বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারিনি দৈনিক মাইলকে মাইল হেটে গিয়ে মাস শেষে বেতন না পাওয়ার কষ্ট। বুঝতে পারিনি শিক্ষকদের কষ্ট। আব্বু সেদিন চোখের পানি ফেলেছিলেন একমাত্র আমাদের জন্য। অনেকদিন ধরে তিনিও প্রতীক্ষায় ছিলেন বেতন পেয়ে আমাদের ভালো-মন্দ কিছু খাওয়াবেন। আমাদের কিছুটা সাধ পূরণ করবেন। আমাদের পোশাক-আশাক কিনে দেবেন। আব্বু কখনো তার নিজের পোশাকের দিকে তাকাতেন না, তার ব্যবহারের স্যান্ডেলটিতে এমন কোনো জায়গা ছিলো না, যেখানে সেলাই করতে বাকি ছিল।

পাঠ্য বইয়ের বাহিরেও আব্বু আমাকে সহ শিক্ষা কার্যক্রমে উৎসাহী করতেন। আল কোরআন তেলাওয়াত, হামদ্, না’তে রাসুল ও রচনা প্রতিযোগীতা, বক্তৃতা, আবৃত্তি, ছবি আঁকা ইত্যাদি। মানুষ গড়ার এই মানুষটি সব সময়ই ছিলেন শিক্ষানুরাগী। আব্বু ছিলেন এক ডজনেরও বেশি মাদ্রাসার শিক্ষক এবং উদ্দ্যোক্তা। শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না।

সমাজে মেয়েদের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ছিলেন প্রতিবাদী কন্ঠস্বর এবং ঝরে পড়া মেয়েদেরকে স্কুল-মাদ্রাসা মুখী করার ছিলেন একান্ত প্রচেষ্ঠা।

আব্বু নিজে শিক্ষক থাকলেও আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন রাস্ট্রের সেবক হওয়ার। জানিনা আব্বুর সে স্বপ্ন পূরন করতে পারি কিনা। বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে আমি একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত। জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভের সূচনা লগ্নে যে স্থানে আজ আমি দাঁড়িয়ে আছি তা সম্পূর্ণরূপে আমার আব্বুর অবদান। আমার আব্বু আমাকে কোনদিন কিছুতে না করেননি। শুধু বলেছেন, “ যা কিছু করবে দেখো যেন কিছুতে আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ণ না হয়।” আব্বু’র কাছেই পেয়েছি ভালোর মাঝে থেকে ভালটুকু গ্রহন করার আর মন্দের মাঝে থেকেও নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার শিক্ষা। আজও যে কোন বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আমার আব্বুই আমার প্রধান উপদেষ্টা। মহান আল্লাহর কাছে আমি অশেষ কৃতজ্ঞ এমন এক বাবার সন্তান করে পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য। সারাদিন সারারাতও যদি আব্বুকে নিয়ে লিখি তাও শেষ হবেনা। তবে সংক্ষেপে এটুকু বলি, আমার আব্বু আমার শিক্ষক, আমার বন্ধু, আমার আদর্শ।

শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি ছিলেন মধ্যমনি, প্রায় সময়ই আবুর সাবেক শিক্ষার্থীরা টেলিফোনে আব্বুর খোঁজ খবর নিতেন এবং আব্বুকে দেখতেও আসতেন। আব্বুর কর্ম ময় জীবনে মানুষের এই মহৎ ভালোবাসায় সন্তান হিসেবে আমি গর্বীত। সৃষ্টিকর্তার নির্ধারিত নিয়মে আব্বু প্রায় ৫ বছর আগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। আব্বু ছাড়া এই পৃথিবী বড়ই শুন্য লাগে। বড় ভালোবাসি আব্বু আপনাকে। আদর্শ শিক্ষক হিসেবে আব্বুই ছিলেন আমার শ্রেষ্ঠ নায়ক। পরপারের জীবনে মহান আল্লাহ যেন আব্বুকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন এবং পৃথিবীর সব বাবারা ভালো থাক এটাই কাম্য ।।#

Facebook Comments Box

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ নড়াগাতীর সংবাদ।
প্রযুক্তি সহায়তায় Shakil IT Park