অতিরিক্ত শীতে কাপছে ভাসমান ছিন্নমুলেরা
হাবিবুর রহমান বিশেষ প্রতিনিধি
হঠাৎ শীতের তীব্রতা বাড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষেরা। সচ্ছলরা বড় মার্কেট ও শপিং সেন্টারে গিয়ে শীতবস্ত্র কিনতে পারলেও তাদের পক্ষে সেটি সম্ভব নয়। অন্যদিকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। শীতের কারণে তাদেরকে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
অসহায় মানুষেরা সর্বাধিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজন মেটাতে অপরাগ এসব মানুষের পক্ষে একসঙ্গে শীত মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
খুলনার বিভিন্ন অলিগলি, ফুটপাথ, বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশনে সরেজমিন ঘুরে ছিন্নমূল ও ভাসমান মানুষদের বেহাল অবস্থা চোখে পড়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রয়েছে ভাসমান শিশু-কিশোর, নারী ও বৃদ্ধরা। তীব্র ঠান্ডায় ফুটপাথেই আগুন জ্বেলে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে অনেকে। কেউ ছেঁড়া কাঁথা ও চাদর মুড়ি দিয়ে কোনো রকমে রাত পার করছে। তাদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে।
রেলস্টেশনে ছিন্নমূল মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ায় তাদের কষ্টও বেড়েছে। আগে সাধারণ কাপড়ে থাকতে পারলেও এখন সম্ভব হচ্ছে না। একটি ছেঁড়া কাঁথা বা চাদর জড়িয়ে কোনো রকমে রাত পার করতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধা জানান, শীতের কারণে রাতে না ঘুমিয়ে জেগে থাকতে হয়। পুরনো একটি ছেঁড়া কাঁথা ও বস্তা গায়ে জড়িয়ে রাত পার করতে হচ্ছে। শুধু ফুটপাথে তার মতো ভাসমান অনেককে খুবই অসহায়ভাবে রাত পার করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ অনেকে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে আছে।
রাত ০৩ টায় সরেজমিনে শিববাড়ি এলাকা গিয়ে দেখা যায় ভাসমান কয়েকজন কাগজ-খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। এক মহিলা জানান ভিডিও করে ছবি তুলে কি হবে, দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার খরচের পরে টাকা না থাকায় শীতের কাপড় কিনতে পারছেন না তিনি।
শীতের তীব্রতা বাড়ায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত ভাসমান মানুষদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। এর মধ্যে জ্বর-সর্দি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বেশি। ভাসমান বৃদ্ধদের অনেকেও অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে।